মোরব্বা তো খেয়েছেন, জানেন কি এর ইতিকথা ?

মোরব্বা তো খেয়েছেন, জানেন কি এর ইতিকথা ?
অমিতাভ হালদার
সিউড়ি গিয়েছেন অথচ সেখানের মোরব্বা চেখে দেখননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কার্যত ‘না মুককিন’।
বীরভূমের সদর শহর সিউড়ির সঙ্গেই অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে এই মোরব্বার নাম।
অনেকেই চেখেছেন নানা রকমের মোরব্বা। কিন্তু এই মোরব্বা কি ভাবে এল তা জানেন না অনেকেই। জানেন কি নবাবের হাত ধরে কারিগর এসেছিলেন বেনারস থেকে! আজ জেনে নেব এই রসময়ের কিছু ইতিকথা---
শুরুতে ছিল শুধুই চাল কুমড়ো।একে একে বেল, শতমূল।পরে পরে আরও অনেক কিছু।
কড়া চিনির রসে চোবানো মন ভোলানো সেই মোরব্বা খেয়েই অনেকে আলাদা করে চিনে নিয়েছেন সিউড়িকে। শোনা যায়, বীরভূমের রাজনগরের নবাব ছিলেন বদির উদজ্জামাল।
সালটা ১৭১৮। সেই নবাব গিয়েছেন উত্তর ভারত ভ্রমণে। বেনারস, আগ্রা, লখনৌ। সেখানে গিয়েই মোরব্বা খেয়ে অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন নবাব। ফিরে যখন আসেন বেনারস থেকে সঙ্গে করে নিয়ে আসেন মোরব্বা তৈরির কারিগর। সিউড়িতে মোরব্বা তৈরির সেই শুরু।
এই ভাবেই কখন যেন সিউড়ির সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে মোরব্বার নাম।
স্বাধীনতার বহু আগে নবাবের আমলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই মোরব্বার ব্যবসা।
এক সময় শুধুই চাল কুমড়ো। তার পর বেল আর শতমুল দিয়ে তৈরি হতো মোরব্বা। সময়ের সঙ্গে সেই তালিকায় যোগ হয়েছে নাসপাতি, আম, গাজর, পটল, বরবটি এমন কী লাল লঙ্কা,আমলকি, হরতুকিও।
বেনারসের কারিগরদের দিয়েই মোরব্বা তৈরিতে ফল ও সব্জির সঙ্গে চিনি ছাড়া আর কিছুই মেশানো হয় না। কৃত্রিম কিছু বা কোনও রাসায়নিকের ব্যবহার হয় না। তাই খাদ্যগুণও বজায় থাকে।
( লেখক একজন নাট্যকর্মী)



