মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর ও প্রস্রাব খাওয়ানো! বিহার সরকার ও পুলিশ প্রধানের কাছে নোটিশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের

মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর ও প্রস্রাব খাওয়ানো! বিহার সরকার ও পুলিশ প্রধানের কাছে নোটিশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: পাটনায় এক দলিত মহিলাকে সকলের সামনে নগ্ন করে মারধর এবং প্রসাব পান করানোর ঘটনায় গোটা দেশজুড়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় রীতিমতো হতভম্ব হয়ে গেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। দেশের সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনার রিপোর্ট দেখার পরই জাতীয় মানবাধিকার কমিশন (এনএইচআরসি) বিহার সরকার এবং রাজে্যর পুলিশ প্রধানকে নোটিশ পাঠিয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিহারের রাজধানী পাটনায় দলিত মহিলার উপর যে অত্যাচার হয়েছে, তা মধ্যযুগীয় বর্বরতাও হার মানতে বাধ্য। মহিলাটি এক পরিচিতর কাছ থেকে মাত্র দেড়হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি মতো সুদ সমেত টাকাও ফেরত দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরও অভিযুক্তরা আরও টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। তাদের দাবি না মানায় মহিলার বাড়িতে চড়াও হয় এবং তাঁকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে অকথ্য অত্যাচার চালায়। সকলের সামনে নগ্ন করে বেধড়ক মারধোরও করে। এমনকী, তাঁকে প্রস্রাব পান করতেও বাধ্য করে। সংবাদমাধ্যমে এই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরই স্বতঃপ্রণোদিতভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নোটিশ পাঠিয়েছে। কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যদি সতি্য হয় তাহলে নির্যাতিতা মহিলার সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তাতে একটা বিষয় স্পষ্ট যে, অপরাধীরা আইনের ভয়কে কার্যত উপেক্ষা করেই ঘটনাটি ঘটিয়েছে। যা রীতিমতো উদ্বেগের বিষয়। সেই কারণেই, কমিশন আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিহারের মুখ্যসচিব ও পুলিশ প্রধানের কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে। একইসঙ্গে এই নোটিশে বলা হয়েছে, শারীরিক নির্যাতনের শিকার ওই মহিলার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থে্যর যে ক্ষতি হয়েছে, তার ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা উচিত। নির্যাতিতা মহিলা তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের। এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি আইন অনুযায়ী ওই মহিলা ক্ষতিপূরণের যোগ্য। এবং কমিশন আশা প্রকাশ করেছে এই ঘটনায় বিহার প্রশাসন আইনানুসারে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। রাজ্য সরকারের তরফে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নির্যাতিতা মহিলার সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করা হয়েছে কিনা, সে বিষয়েও নোটিশে জানতে চাওয়া হয়েছে। সংবাদসংস্থা সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা উচ্চবর্ণের এবং প্রভাশালী। ওই অঞ্চলে কয়েকটিই মাত্র তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ভুক্ত পরিবার রয়েছে। তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের তরফে বলা হয়েছে, তারা এই ঘটনার পর রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছে। এবং এই জায়গা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।


