কেন এই পরিবর্তন?

কেন এই পরিবর্তন?
জাতীয় নাগরিকপঞ্জী, বিভাজন ও শাসন, ব্রিটিশ সরকারের মূলমন্ত্র মেনে একাজেও হিন্দূ মুসলমান, নির্ভয়া কাণ্ডের একের পর এক পুনরাবৃত্তি, জেএনইউ থেকে জামিয়া ছাত্রদমনে পুলিশ, শিবসেনার শিবিরবদল, ঝাড়খণ্ডের ঝড় এইসব নিয়ে শীতে বেশ মেতে ও তেতে আছে ভারতবাসী। মোদীর ভক্তমণ্ডলীর সঙ্গে রাহুল গান্ধীর হুল নিয়ে হুলুস্থুল, যা অনেকটাই স্থূল রাজনীতির ভুল পদক্ষেপ, দিল্লি থেকে কলকাতার হাড়কাঁপানো শীতের উত্তাপ হয়ে দিব্যি মৌতাতে মশগুল রেখেছে হতদরিদ্র ভারতের কুড়ি শতাংশ মানুষকে। সুখের অসুখটাই যাদের উপজীব্য। আর সত্যি সত্যিই যাদের অ-সুখ, জীবনযুদ্ধে যারা পরাস্ত, যাদের মাথায় ওপর আচ্ছাদন, পায়ের নীচের মাটি সরে গেছে। অচ্ছে দিনের নাগাল পাওয়া যায় নি। আশা মানে যাদের কাছে দেশনেতাদের মুখের ভাষা, তারা রোজ শুধু নিত্যনতুন পরিবর্তনের গল্প শুনে চলেছে। নানা ঘটনার ঘনঘটায় চাপা পড়ে গিয়েছিল রাজধানী দিল্লির রূপান্তরের সরকারি ফরমান। রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে থেকে কার্যত ইন্ডিয়া গেট অব্দি রাজপথের চাল চরিত্র চেহারা বদলে দেওয়া হচ্ছে। সংসদভবন ও নর্থসাউথ ব্লককে রেখেই তাদের শরীরে নয়া আত্মা ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে। যথাক্রমে আইন প্রণয়ন ও প্রশাসনের বদলে এই তিন ভবন করবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণের মানে মিউজিয়ামের কাজ। ভারতের সংসদীয় গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মূল আধার এই তিন ভবনকে যদি এভাবে বদলে দেওয়া হয় তাহলে তার প্রতীকী অর্থ কী? সেইসঙ্গে রাজপথের চার কিলোমিটার বৃত্তের বৃত্তান্ত? যেখানে সব হেরিটেজ বিল্ডিং ভেঙে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি, অফিস ও কেন্দ্রীয় সচিবালয় হবে, তার পিছনেই বা গূঢ় তত্ত্বটা কী? ভোটের প্রতিশ্রুতিতে যা ছিল তার দেখা কোথায়? কোথায় বছরে দুকোটির কর্মসংস্থান? ২৫ হাজার কোটি ব্যয়ের এই রাজপথ রূপান্তর প্রকল্প গুজরাতের একটি নির্মাণ সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে। বেনারসের বিশ্বনাথ মন্দির সংস্কার প্রকল্পও একই সংস্থার হাতে। তাহলে কি অগ্রাধিকার পরিবর্তন করেছে সরকার? সেটা কার হিতে? শিগগিরই স্পষ্ট হয়ে যাবে আলতো মেঘে ঢাকা শীতের আকাশ।


