সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে কেন দেখা করলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?

সনিয়া-রাহুলের সঙ্গে কেন দেখা করলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
একদিন বা দু’দিন নয়। চারদিনের জন্য দিল্লি গেলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ, সনিয়া গান্ধী বা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একটি বারের জন্যও দেখা করলেন না।
যা নিয়ো তোলপাড় দিল্লি। তোলপাড় তো হওয়ারই কথা। বিজেপি বিরোধী জোট তৈরির জন্য প্রথম থেকেই সব ধরণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি যে তাঁর প্রথম এবং প্রধান শত্রু তা বারবার নিজে মুখে স্বীকারও করেছেন। আর বিজেপি বিরোধী লড়াইকে দেশজুড়ে পৌঁছতে হলে কংগ্রেস ছাড়া যে কঠিন, তা সকলেরই জানা। ভোটের অঙ্কে কংগ্রেস যতই দুর্বল হোক না কেন?
আর যে কারণে আগে যতবার দিল্লি গিয়েছেন ততবারই সনিয়া গন্ধী-রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ২০২৪ সাল আর বেশি দূরে নয়। তা সত্ত্বেও এবার চারদিনের দিল্লি সফরেও কেন দেখা করলেন না? প্রশ্নটা ওঠা স্বাভাবিক। যদিও এর একটি ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছেন, পাঞ্জাবের ভোট নিয়ে সনিয়া গান্ধী-রাহুল গান্ধীরা ব্যস্ত। তাই তিনি দেখা করেননি।
না এখানেই থেমে থাকেননি। এটাও জানিয়েছেন যে, সব বারই দেখা করতেই হবে এমন কোনও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই।
তবু প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এবার কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতার সঙ্গে দেখা না করার অন্য কারণ রয়েছে। তা হল, অপ্রীতিকর প্রশ্ন এড়ানো। বর্তমান সময়ে একাধিক কংগ্রেস নেতাকে নিজেদের দলে নিয়েছে তৃণমূল। এমনকী, যে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে সে সময় কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন ক্রিকেট তারকা কীর্তি আজাদ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার থেকেও বড় যে ঘটনা হল, মেঘালয়ে কংগ্রেসকে একেবারে দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিয়েছে বলা যায়। কংগ্রেসের ১৮জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জন বিধায়ককেই নিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। ফলে মেঘালয়ে কংগ্রেস বিপন্ন বলা যায়। পরিবর্তে মেঘালয়ে বিরোধী দল হিসেবে মর্যাদা পেয়ে গেল তৃণমূল। এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের দুই শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখা করলে, প্রশ্নটা যে উঠতোই বা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই প্রশ্নের কী জবাব দিতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
রাজনীতিতে সবই সম্ভব। এটা ভীষণ চালু কথা। কোনও রাজনৈতিক দল নিজেদের শক্তি বৃদ্ধিকরতে অন্যদলের নেতা-নেত্রী, বিধায়ক-মন্ত্রীদের দলে নিতেই পারেন। এটা যেমন সত্য তেমনই কংগ্রেসকে যেভাবে ভাঙছে তৃণমূল, সেই প্রশ্নটা উঠলে তাও বিড়ম্বনার, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। হয়তো সেই কারণেই এবার ১০ জনপথ থেকে দূরেই রইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


