পদ্মের শেকড় কোথায়, ভাসমান বিজেপি হাতড়ে বেড়াচ্ছে বঙ্গ পুকুরের অলিগলিতে

পদ্মের শেকড় কোথায়, ভাসমান বিজেপি হাতড়ে বেড়াচ্ছে বঙ্গ পুকুরের অলিগলিতে
সুমন ঘোষ
বাংলায় পদ্মের শেকড় টা কোথায়? লোকসভায় যা সারা পুকুরের বৃহৎ অংশ জুড়ে পাতা, ফুলে বিস্তার করেছিল। জঙ্গল থেকে পাহাড় -সর্বত্রই। আরও প্রচুর নতুন কুঁড়ি দেখা দিয়েছিল পাতার আড়ালে আবডালে। সেগুলো ফুটলে বঙ্গ পুকুর পদ্মে ভরে উঠত নিশ্চিত। কিন্তু হঠাৎ সম্ভাবনার কুঁড়ি গেল কোথায় গেল? ফুটব ফুটব করেও ফুটল না কেন?
এর পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে। বিজেপি থেকে আরএসএস – নানা কারণ দেখিয়েছে। সাধারণ মানুষও কিন্তু নানা কথা বলছে। যার মোদ্দা কথা হল, শেকড়টা মিলছে না। তাই পুকুরের জলে ভাসতে ভাসতে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে বিজেপি। কিন্তু কোথাও তার খোঁজ মিলছে না। তাই একের পর এক জায়গায় চলছে তল্লাশি। অদ্ভূতভাবে দেখা মিলছে না শেকড়ের। বিষয়টি হালকা করে নেওয়ার উপায়ও নেই। কারণ, শেকড় ছাড়া বেশিদিন তো বাঁচতে পারবে না ফুল। এমনকী, সে জলে গ্লুকোজ দিলেও।
শেকড়ের সন্ধান করতে করতে পাগল দশা। শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালী গুহ, দীপেন্দু বিশ্বাস, সরলা মুর্ম্মু থেকে আরও কতজনের কাছে যাওয়া। তালিকাটা বেশ লম্বা। ফল বেরোনোর ক’দিন পরেই দেখা যাচ্ছে, তাঁদের অনেকেই সমূলে ফিরতে চেয়েছেন তৃণ-মূলেই। বেশিরভাগই হাঁফাচ্ছেন পদ্মে। তাঁদের মূল নাকি মমতা বন্দ্যোধ্যায়ের আঁচলের তলাতেই।
তারপর শেকড়ের খোঁজে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র। না সেখানেও শেকড়ের সন্ধান মেলেনি। সব শেষে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়! অনুবীক্ষণেও শেকড় মেলার আশা মিলছে না। উল্টে আমের মরশুম শেষেও মুকুল আসার জল্পনা। তা শুভ্রাংশুর কথা হোক বা মুকুলপত্নীর অসুস্থতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাওয়া। তার উপর তথাগত রায়ের একটানা আক্রমণ। ভোটের আগে ক্ষমতা দখলের স্বপ্নে বিভোর হয়ে থাকা বাকি বিজেপি নেতারাও স্বপ্নেভঙ্গে মনমরা। সব মিলিয়ে বঙ্গ জলে পদ্মের শেকড় খুঁজতে হিমশিম দশা।
খুঁজতে খুঁজতে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ- সবাই আকাশ থেকেও চোখ রেখেছেন বাইনোকুলারে। চেষ্টা জারি আছে। শুধু হারিয়ে গিয়েছে শুধু শেকড়।
তাহলে শেকড়খানা কী থেকে গিয়েছে দিল্লিতেই! বঙ্গে যে বীজ পোঁতা হয়েছিল তা কখন সবার অলক্ষ্যে হাওয়াই চপ্পল মাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছে তা বুঝতেই পারেনি কেউ। নিজেদের বীজ অঙ্কুরোদ্গম হল কিনা তা না দেখে কেবলই ঘাস কাটার চেষ্টা হয়েছে। নির্বাচন শেষে অনুকূল পরিবেশে আবার সেই ঘাস বাড়তেও শুরু করে দিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের ফল সেকথাই বলে।
তবে এটাও ভুলে গেলে চলবে না, ৭৭টি বীজ ছড়িয়ে রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। অনুকূল পরিবেশ পেলেই কিন্তু অঙ্কুরোদ্গম ঘটবে। তখন কিন্তু শেকড় গজাবেই। তৃণমূলের তৃতীয়বারের সরকার সেই পরিবেশ তৈরি করে দেবে নাকি আরও তৃণমূল স্তরে পৌঁছে মা-মাটি-মানুষের প্রকৃত সরকার হবে- তার উপরেই নির্ভর করছে সব কিছুই।


