মুখ্যমন্ত্রীকে একটি বুথেই দু’ঘন্টা আটকে রাখা কী বিজেপির কৌশল, সেই সূযোগে ভোট করালেন শুভেন্দু?

মুখ্যমন্ত্রীকে একটি বুথেই দু’ঘন্টা আটকে রাখা কী বিজেপির কৌশল, সেই সূযোগে ভোট করালেন শুভেন্দু?
01 Apr 2021, 05:34 PM

মুখ্যমন্ত্রীকে একটি বুথেই দু’ঘন্টা আটকে রাখা কী বিজেপির কৌশল, সেই সূযোগে ভোট করালেন শুভেন্দু?

 

 

নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র নন্দীগ্রামে ভোটের দায়িত্ব নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল থেকে বাইরে বের হননি। বাড়িতে বসেই নিজের কেন্দ্র নন্দীগ্রামের পাশাপাশি রাজ্যে দ্বিতীয় দফায় যে ৩০টি আসনে এদিন ভোট হচ্ছিল, সবই পরিচালনা করছিলেন। কিন্তু যখন বয়ালের ৭ নম্বর বুথের খবর পেয়ে সেখানে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী যখন বয়াল বুথে হাজির হলেন, তখন বুথের বাইরে চুড়ান্ত বিশৃঙ্খলা। জমায়েত করে রয়েছে দু’পক্ষই। একদিকে তৃণমূল আর অন্যদিকে বিজেপি। যে কোনও সময় সংঘর্ষ বেধে যাওয়ার উপক্রম। দু’পক্ষকে থামাতে মাঝে ব্যারিকেড বানাল পুলিশ। এই চুড়ান্ত গন্ডগোলের সময় মুখ্যমন্ত্রীকে বুথের বাইরে বের করাও সম্ভব ছিল না। কারণ, তাঁকে তো নিয়ে যেতে হবে হুইলচেয়ারে। তাতে দীর্ঘ সময় লাগবে। ফলে বুথের বাইরে বের করার ঝুঁকি নেয়নি কেউ।

এরপর নানা সময় বাহিনীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। পদস্থ অফিসাররাও ঘটনাস্থলে হাজির হন। হাজির হন কমিশনের পদস্থ কর্তাব্যক্তিরাও। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও তাঁরা কথা বলেন। আর তা করতে করতে কেটে যায় প্রায় দু’টি ঘন্টা। উল্টোদিকে সেই সময় কিন্তু বুথে বুথে ঘুরে বেড়িয়েছেন বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।

 

এই ঘটনার পরই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রথমটি হল, এটা বিজেপির কৌশল ছিল নাকি? কেন কৌশল বলা হবে? মুখ্যমন্ত্রীকে একটি জায়গায় আটকে রাখতে পারলে অনেক সুবিধে। কারণ, প্রথমত সেই এলাকার বিষয় নিয়েই চারদিকে চর্চা চলবে। নিরাপত্তা বাহিনীর বেশিরভাগ বল একটি জায়গায় কেন্দ্রীভূত হয়ে যাবে। কমিশনের লোকজনও সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে পারবেন না। কারণ, মুখ্যমন্ত্রী যেখানে থাকবেন তাঁরাও।

 

 

আর সব থেকে বড় বিষয়টি হল, সংবাদমাধ্যও কিন্তু সেই একটি বুথকে কেন্দ্র করেই সব খবর পরিবেশন করবেন। বাকি কোথায় কী হচ্ছে সহজে কেউ জানতে পারবেন না। সেই সূযোগের সম্পূর্ণ ব্যবহার করতে পারবে বিজেপি।

 

এখানেই শেষ নয়, উল্টে তৃণমূল প্রার্থী তথা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগও আনতে পারবে বিজেপি। সে অভিযোগ হল, বুথে থেকে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ। বর্তমানে ভোটে দেখা দিয়েছে, ভোটার ছাড়া প্রার্থীদেরও বুথের মধ্যে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী, প্রার্থী জোর করে ঢুকতে তাকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও দেখা গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী কেন দীর্ঘক্ষণ বুথে থাকলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে।

 

তাই ওয়াকিবহাল মহলের মতে, একটি বুথে দু’ঘন্টা আটকে নন্দীগ্রামের প্রার্থী নিজেরই ক্ষতি করে পেললেন। হয়তো তার পূর্ণ ফায়দা তুলল বিজেপি।

Mailing List