বিরূপাক্ষ পণ্ডার তিনটি কবিতা -জাগরণ, অন্ধসরণী, কাঁথা সেলাই

বিরূপাক্ষ পণ্ডার তিনটি কবিতা
বিরূপাক্ষ পণ্ডা
জাগরণ
গভীর রাতে স্বপ্নের গভীরে
মাতাল সংক্রমণ
ঘরের জানালায় উঁকি দ্যায়
কালি-কলম-মন।
শূন্যে, মহাশূন্যে ঘোরে
ঢেউ - ভর্তি মাথা
নিদ্রাহীন রাতের কলাপে
--- জাগে
সমুদ্র, কবিতাসমগ্র।
......
অন্ধসরণী
দশকের পর দশক সাদা-কালোর বাঁকে
তেল-পিদিমের শিখায় বেহালপঞ্জী খাতা
পাইনি কিছু'র লজ্জায় অস্ত্রশালায় আছি
ভারী বোঝা গা নিয়ে সাগর গোঙায় শাঁখে।
চটের ঘরে খুব জমেছে অচল যত নুড়ি
মর্জিমাফিক ফাঁদ পেতেছে চাঁদবেনে জ্বালা
চলার জন্যই চলতে থাকে ক্ষোভের গোলা
সময় ডানায় হালপঞ্জী যায় বনানীর বাড়ি।
গলায় আটকে বিষবাষ্প খোঁজে সোঁদাগন্ধ
হে হিমবন্ত সন্ধ্যা, অন্ধকে দাও গতিছন্দ!
.............
কাঁথা সেলাই
বয়সের শব্দজাল ছিঁড়ে গেলে মানুষ আবার মানুষ হতে চায়। ভ্রমণ পিপাসার মতো নেশায় চেপে বসে সংরক্ষণ প্রণালী। ইতিহাস খুলে পড়তে বসে অশ্বত্থামার অবস্থান এবং ইত্যাদি। তারপর স্ক্যান করলে বোঝা যায় পাকস্থলী খালি।
সাধারণ চাপ নিয়ে বেশ ভালো জেগে ওঠে ধর্মপ্রচারক। প্রার্থনার ফল নিয়ে সকাল-সন্ধ্যা বাতাসা খুঁজে বেড়ায় সতীর একান্নপীঠ। দরদী আকুল স্বরে গেয়ে ওঠে 'এমন মানব জনম আর কী হবে, মন যা করে ত্বরায় কর এই ভবে'।
সুন্দরের ছায়াপথে আটকে থাকা আঁধার নিয়ে গবেষণারত হে
যুবক, হে নবি, এর পর কী সুস্থ থাকবে তোমার মেধা ও শরীর?
.........
লেখক পরিচিতি: বিরূপাক্ষ পণ্ডা। জন্ম ১৯৬৮ সালের ২ মে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার তালদা গ্রামে। পেশায় অক্ষরকর্মী। নিত্য নতুন বই ও সাময়িক পত্র-পত্রিকা সংগ্রহ ও পাঠে মনোযোগ বেশি। এ পর্যন্ত প্রকাশিত পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ। সম্পাদিত কবিতা সংকলন দুটি। সাতাশ বছর ধরে সম্পাদনা করে চলেছেন কবিতা ও কবিতা বিষয়ক পত্রিকা "প্রতিকথা"।


