বিরূপাক্ষ পণ্ডার তিনটি কবিতা

বিরূপাক্ষ পণ্ডার তিনটি কবিতা
বিরূপাক্ষ পণ্ডা
গাছতলা
ঠিকানাবিহীন গাছতলায় থাকি
পাতা কুড়ানির সঙ্গেও কথা বলি
লাল মোরামের রোদ ও ধূলা মাখি
বর্ণচোরা রাখাল বাজায় বাঁশি।
ঠিকানা বিহীন গাছতলায় থাকি
জংলী ফুলের ঝরে পড়া দেখি
বেলা শেষের গদ্যও চোখে পড়ে
তবুও আমি সন্ধ্যাবেলার ফাঁকি।
ঠিকানাবিহীন গাছতলায় থাকি
গ্রামেও নেই চিঠি লেখার শ্বাস
বেলতলাতে নেড়া বাজায় কাঁসি
গাছই ভালো, গাছই ইতিহাস।
.........
আড়বাঁশি
এসেই বললো “কোথায় বসবো?"
দাঁড়িয়ে থেকে নিজেকে চেনালো
খাওয়ার সময় বললো ‘তুমি খাও’
উঠেই বললো ‘আবার আসবো'
তৈরী হলো টুকরো কথা মালা
তুমি বললে ‘শুরু হলো জ্বালা
জ্যামিতির ঘরে বীজগণিতের
খেলা চেনা পাখি ভাসায় উড়ান ভেলা
প্রেম বোঝে শেষ বিকেলের বাঁশি
আলপথে নেই কোনোও উদ্বোধন
বাঁচা মানেই আমার তোমার প্রীতি
একা মানেই একার উন্মোচন।
.......
বাংলা বাজার
রচিত কথায় ভর করে ওড়ে পদাবলী
এই বঙ্গে রঙ্গ করে ‘ওরা আমরা' খাতা
সহজপাঠ আনন্দমঠ চিনিয়ে দ্যায় বাঁক
ধর্মের নামে রচিত হয় মারণ সভ্যতা।
মহাভারত মহাকাব্য ঝুলছে গাছের ডালে
আকাশ কুসুম কল্পনায় নজরদারি জোর
হরিদাসের টক শো ভোরাই চা-এ ধূম
জমি নিয়ে চিত্রনাট্য, দাদা-দিদি চোর।
ওরা এখন ছোটলোক, বাকী সব বীর
নেতার তোপে কাগজ টিভি রূপকথা গড়ে
নীতি নিয়ে বলতে গ্যালে তদন্তের ছ্যাকা
দুর্নীতির ঈগলপাখি নেতা নেত্রী'র ঘাড়ে।
……
লেখক পরিচিতি: বিরূপাক্ষ পণ্ডা। ১৯৬৮ র ২ রা মে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন থানার তালদা গ্রামে। পেশায় অক্ষরকর্মী। নিত্য নতুন বই ও সাময়িক পত্র-পত্রিকা সংগ্রহ ও পাঠে মনোযোগ বেশি। এ পযর্ন্ত প্রকাশিত পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ। সম্পাদিত কবিতা সংকলন দুটি। সাতাশ বছর ধরে সম্পাদনা করে চলেছেন কবিতা ও কবিতা বিষয়ক পত্রিকা " প্রতিকথা"।


