ড: দেবী প্রকাশ নিয়োগীর তিনটি কবিতা

ড: দেবী প্রকাশ নিয়োগীর তিনটি কবিতা
07 May 2023, 06:20 PM

ড: দেবী প্রকাশ নিয়োগীর তিনটি কবিতা

ড: দেবী প্রকাশ নিয়োগী

 

গতি

 

কেউ এসে বন্ধ করে দাও

বন্ধ করে দাও আমার মুখ। মানুষ ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাচ্ছে,পৃথিবীতে থেকেই আর এক পৃথিবীর দিকে চলে যাচ্ছে, জীবন।

আনমনে, অজান্তে, অজ্ঞাতসারে!

 

উপলব্ধির ফাঁদে আটকে পড়া মানুষগুলো

 আর যাই হোক-

 ডানার ঝাপড় মারে,

 ফাঁদ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রচেষ্টা।

আর এখানেই সহধর্মিনী থামিয়ে দিয়ে বলে ওঠে,

এসব নিয়ে লেখনা স্বামীজি। লিখেই বা কি হবে!

 মুখোশে সব ঢেকে যায় চিরকাল,

মোকা ঝড়ে সব উড়ে যাবে সাম্প্রতিককাল।

 রাতের অন্ধকারে যাদের হাতে সিঁধকাঠি-

 দিনের আলোয় মুখে প্রতিশ্রুতি।

 

মায়াময় এ পৃথিবীর সর্বপ্রান্তে অদৃশ্য সব ফাঁদ পাতা,

 সন্তর্পনে পা ফেলতে না পারলেই, অক্টোপাস মুহূর্তেই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরবে তোমায়,

পড়তে হবে মুখ থুবড়ে।

তবুও জীবন তরী বেয়ে চলি, প্রতি- পল- অনুপলে,

 প্রতিটি ক্ষণ নতুন নতুন প্রাণে- অনুভবে।

......

 

আয়নার সামনে

 

আমার চেষ্টার বীজ অঙ্কুরিত হবে, তেমন ভাবনায় কলম ধরেছি।

যেখানে যেখানে স্বপ্নের রঙে খামতি ছিল, সম্পূর্ণতার পালা সাঙ্গ করেছি,

 আয়নার সামনে নিজেকে দাঁড় করিয়ে।

 যে লোক একা থাকে

 তারও একটা ঘর লাগে,

ঘরে ফিরে বিষন্ন মানুষ শুয়ে থাকে।বিষন্নতা একজন রাজা।

 

এইসব বাগানে তারা খেলা করেছিল,

পাতা ছিঁড়েছিল, ফুল ছিঁড়ে রেখেছিল মুক্ত অনশন মঞ্চে। এখানে সবাই চেপে ও মেপে হেঁসেছিল লুকোচুরির খেলায়,শুকনো হাওয়ার মরসুমে,

সাম্যবাদের চিন্তা ভাবনা বিসর্জন দিয়ে।

 কোন কোন মানুষের তেমনই বিষন্নতা ঝরে গেলে,

তাকে মলিন ভিখারির মত লাগে।

 

 রাত বেড়ে গেলে আমার কলমেও  ভুগর্ত ভিড় করে কঙ্কাল নরম হয়ে নুয়ে আসে।

 একটুখানি আগুন চাইছি,

 তবু ধার দেবে না? ও দাবানল!

মোহবন্ধনের পথে সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠায় তাদের খুঁজছি।

..........

 

পিতার প্রকৃতি রাজ্য

 

বাড়ির সামনে প্রকৃতি বাগান, বাবার ঘামে ফুটে উঠে পূজা আর শখের ফুল- ফল।

 নাতি নাতনিদের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে উঠে মেহগনি, কয়েকটা সজনে ও অজস্র কলা,কাঁঠাল গাছ,

 বিভিন্ন ভ্যারাইটির আম -আনারস।

- কাগজী লেবু ও বাতাবি লেবু এখন শুধু কাঁটা গাছ মাত্র নয়-ভিটামিন সি সমৃদ্ধ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অত্যাবশ‍্যকীয় সহায়ক খাদ্য উপাদান।

সেখানে এখন প্রতিটি বিকেলে কোদাল খেলা করে,গাছেদের গোড়ায় নামে  বালতি বালতি জল।

খান খান হলে সৃষ্টি হয়! মাটি বোঝে,

কোদালের ডোগায় নির্বিকার ভেঙে চুরে যায়।

 ক্ষতের উপর ঝরে পড়ে খুদে নোটে, খেটে, ঢেঁড়স, ঝিঙে, বিভিন্ন কলাই আর লঙ্কার বীজ।কলমি আর পুঁইশাকের গোড়াগুলো  বাড়ির ফেলে দেয় না কেউ।

ঘাস জমি আলের মাথা দখল নিলেও

এই বাগানে লাউ, কুমড়ো, ভুট্টার বীজ গুলো তা সত্ত্বেও ফুটে উঠলো সাবাস!

 তারই মাঝে কোন অজানা রোগ পাতাগুলো কুরে কুরে খায়।পেয়ারা ও বেদানা গাছটা ফলফলিয়ে বেড়ে উঠে,

সামান্য জল আর গোবর মাটিতেই সন্তুষ্ট!

চন্দন, আমড়া, জাম,নারিকেল,আনারস অনায়াসেই  হয়।

 প্রিয় গাছগুলো বাড়ির সকলে যত্নে আগলে রাখি-

 ফুসফুসে দেবে বলে দূষণমুক্ত বায়ু!

আর এখানেই উঁকি দেয় অপাপ বিদ্ধ আনন্দ,আগামীর প্রজন্ম ---দেবযানী, দেবারতি, দেবমাল্য, দেবাঞ্জন, দেবতনুর শৈশবকাল।

............

Mailing List