এ যেন লাশের বন্যা! লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ে নিহত পাঁচ হাজারের উপর মানুষ

এ যেন লাশের বন্যা! লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ে নিহত পাঁচ হাজারের উপর মানুষ
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: শুধু লাশ। একের পর এক মৃতদেহ। মৃতদেহের পাহাড় তৈরি হয়েছে লিবিয়ার উপকূলে। সুপার সাইক্লোন ‘ড্যানিয়েল’-এর তাণ্ডবে ভেঙেচুরে খানখান হয়ে গেছে। যতদূর চোখ যায়, শুধুই লাশ আর লাশ। গত রবিবার মহাশক্তিধর ঘূর্ণিঝড় ‘ড্যানিয়েল’ আছড়ে পড়েছিল লিবিয়ার বিভিন্ন শহরের উপর। এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ডারনা ও বেনগাজির। কার্যত মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে ডারনা শহর। লাশের পর লাশ জমছে ডারনার উপকূলে। মৃত্যু উপত্যকা ছাড়া এই মুহূর্তে ডারনাকে আর কিছুই ভাবা যাচ্ছে না। গত তিনদিনে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৫৩০০।
লিবিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এই বিপর্যয়ে দশ হাজারের উপর মানুষ নিখোঁজ। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। রাজনীতি-সন্ত্রাস সহ নানা সমস্যায় জর্জরিত লিবিয়ার অন্যতম ধনী শহর ছিল ডারনা। ছবির মতো সাজানো গোছান শহর ছিল এটি। কিন্তু ড্যানিয়েল তাণ্ডবের পর সব উল্টে গেছে। বিশাল জলস্রোত গিলে ফেলেছে এই শহরটিকে। চারপাশে শুধুই ঘোলাটে কাদা জল। ভেঙে গেছে উপকূলকে বেড় দেওয়া রাস্তা। প্রবল বৃষ্টি এবং হড়পা বানে ভেঙে গেছে ডারনার তিনটি বাঁধ। প্রথমে একটি বাঁধ ভেঙেছিল। জলের তোড়ে বাকি দু’টি বাঁধও ভেঙে যায়। এই শহরে এক লক্ষ ২৫ হাজার মানুষ বসবাস ছিল। কিন্তু এই দুর্ঘটনার পর জনসংখ্যার প্রায় ১২ শতাংশ হয় নিখোঁজ না হয় মৃত। লিবিয়ার বিমান পরিবহন মন্ত্রী এবং পূর্বাঞ্চলীয় প্রশাসনের জরুরি পরিস্থিতি কমিটির সদস্য হিচেম আবু চকিওত জানিয়েছেন, ‘‘শহরের ২৫ শতাংশ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গেছে।’’ এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আহতের সংখ্যা হাজার হাজার। দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জায়গা প্রায় নেই। হাসপাতালের বাইরে হাজার হাজার মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটুখানি চিকিৎসা পাওয়ার আশায়। বেহাল অবস্থা ডারনার। শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থাও পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে। টেলিফোন বন্ধ। জলের স্রোতের দাপটে ভেঙেছে রাস্তা-ঘাট। ওয়াডি ডারনা নদীর উপরের একের এক সেতু ভেঙে গেছে। পানীয় জল পাওয়া যাচ্ছে না। নেই খাবারও। এই ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মোকাবিলায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিভিন্ন দেশ। তুরস্ক থেকে ত্রাণ আসছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে আমেরিকা। ত্রাণ পাঠিয়েছে সৌদি আরব। লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ ডিবেইবা জানিয়েছেন, ১৪ টন ত্রাণ সমেত একটি বিমান বেনগাজিতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু ডারনাতে এখনও কোনও ত্রাণ পাঠানো সম্ভব হয়নি।


