বাড়ি থেকে উদ্ধার ছেলের পচাগলা দেহ, অসুস্থ মা শুয়ে পাশের ঘরে

বাড়ি থেকে উদ্ধার ছেলের পচাগলা দেহ, অসুস্থ মা শুয়ে পাশের ঘরে
সুলেখা চক্রবর্তী, হাওড়া
রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া এ বার হাওড়ার শিবপুরে। বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল ছেলের পচাগলা মৃতদেহ। পাশের ঘরে শুয়ে অসুস্থ মা। এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য দেখা দিল হাওড়ার শিবপুরের প্রসন্ন দত্ত লেনে। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে, শিবপুর প্রসন্নকুমার দত্ত লেনের একটি বাড়িতে ৪৮ বছরের লাল্টু সরকার এবং তাঁর বৃদ্ধ মা মালতি সরকার থাকতেন। লাল্টু মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। কোনও রকম কাজকর্মও করতেন না বলে দাবি স্থানীয়দের। মাওও দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ। ২০১৬ সালে স্বামী মন্টু সরকারের মৃত্যুর পর বাড়িতে মা এবং ছেলেই থাকতেন। পেনশনের টাকায় চলত সংসার। দু’জনের অসুস্থতার কারণে গত কয়েক মাস পেনশনের টাকা পর্যন্ত তোলা হয়নি। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, তাঁরা অসুস্থতার জন্য বাইরের লোকের সঙ্গে বেশি মেলামেশাও করতেন না। আত্মীয়-স্বজন সে ভাবে খোঁজখবরও নিতেন না।
তাপস বাছাল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, গত দু’দিন ধরে ওই বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। রবিবার সকালে বাড়ির দরজার নীচ দিয়ে পচা রক্ত বেরোতে দেখা যায়। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এলাকার বাসিন্দারা খবর দেন শিবপুর থানায়। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, ছেলে লাল্টু মৃত অবস্থায় চেয়ারে বসে আছেন। তাঁর মা মালতি পাশের ঘরে বিছানায় শুয়ে। শৈলেন মল্লিক নামে মৃতের এক আত্মীয়ের অভিযোগ, মা, ছেলে কারও সঙ্গেই যোগাযোগ রাখতেন না। বাড়িতে গেলে দরজাও খুলতেন না। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা শুরু করেছে শিবপুর থানার পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, কমপক্ষে তিন দিন আগে মারা গিয়েছেন ছেলে। অসুস্থ মালতীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতালে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দীর্ঘ অসুস্থতার কারণে লাল্টুর মৃত্যু হয়েছে।


