রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণে একগুচ্ছ পরিকল্পনা বিদ্যুৎ দফতরের

রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণে একগুচ্ছ পরিকল্পনা বিদ্যুৎ দফতরের
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিকাঠামো পরিষেবার আধুনিকীকরণের জন্য একগুচ্ছ পরিকল্পনা করেছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর। তার জন্য যে বিপুল অঙ্কের লগ্নি দরকার, তার বড় অংশের ভার বইতে রাজি হয়েছে বিশ্ব ব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক। আধুনিকীকরণ সংক্রান্ত পরিকল্পনাগুলির অন্যতম ছিল স্মার্ট প্রিপেইড মিটার'র ব্যবস্থা। সাধারণ গ্রাহক থেকে বাণিজ্যিক সংস্থা— সবাইকেই বর্তমানের পোস্ট পেইড ব্যবস্থা থেকে সরিয়ে প্রিপেইড মিটার'র রূপান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। চালু হয় পাইলট প্রকল্পের কাজও। ঠিক হয়েছিল, শুরু করার ক্ষেত্রে প্রথম স্তরে থাকবে সরকারি দফতরগুলি। সেই তালিকায় যোগ হবে আধা সরকারি সংস্থা, স্থানীয় প্রশাসন এবং সরকারি সংস্থা বা নিগমগুলি। এরপর বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিকে প্রিপেড মিটারের আওতায় আনতে হবে। তারপর ধাপে ধাপে গৃহস্থের মিটারকে বদলে ফেলা হবে প্রিপেইড মিটার-এ। বর্তমানে রাজ্য সরকারের সব অফিসগুলিতে এই মিটার বসানোর ব্যাপারে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা।
বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মেটাচ্ছে না রাজ্য সরকারেরই বিভিন্ন দফতর। এর ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতরের অধীনস্থ বণ্টন সংস্থা। দু'-এক কোটি নয়, বকেয়া বিলের অঙ্ক ইতিমধ্যেই ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। তাই এবার বিদ্যুৎ বিলের ক্ষেত্রে 'ফ্যালো কড়ি মাখো তেল' নীতি নিচ্ছে বিদ্যুৎ নিজেই। রাজ্যের সব সরকারি দফতরে এবার বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার বসানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের বিদ্যুৎ বিল বাকি থাকার বিষয়টি নতুন নয়। বিগত কয়েক বছর ধরে বিল বাকি পড়ে রয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের দাবি, এখন সেই বকেয়া লাগামছাড়া পর্যায়ে পৌঁছেছে। টাকা না মেটালে, দফতর চালানোই দায় হয়ে উঠছে এবার। আর তাই রাজ্যের সব সরকারি দফতরে এবার বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার বসানো হচ্ছে।
চলতি বছরের গোড়ায় রাজ্য সরকারি দফতরগুলির বকেয়া বিলের অঙ্ক ছিল প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। বকেয়ার নিরিখে সবার আগে ছিল জলসম্পদ উন্নয়ন দফতর। তাদের বকেয়ার পরিমাণ ৪৫০ কোটি টাকারও বেশি ছিল। এরপর ছিল নগরোন্নয়ন দফতর, তাঁদের বকেয়ার পরিমাণ ৩৩১ কোটি টাকা। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ৩০৫ কোটি টাকা বাকি রেখেছিল তখন। রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার কর্তারা বলছেন, সেই বকেয়া অঙ্ক সামগ্রিকভাবে বাড়তে বাড়তে ১ হাজার ৭৫০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে দফতরগুলিতে প্রিপেইড মিটার ব্যবস্থা বণ্টন সংস্থাকে কতটা আর্থিক রেহাই দেয়, এখন সেটাই দেখার।


