পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষাতেও বড় ধাক্কা, হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি যেতে পারে বহু কনস্টেবলের

পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের পরীক্ষাতেও বড় ধাক্কা, হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি যেতে পারে বহু কনস্টেবলের
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: চাকরির অনিয়মে এবার নতুন ধাক্কা। ধাক্কা খেল পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া প্রার্থীরা। হাই কোর্টের নির্দেশে কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়া বহু ব্যক্তির চাকরি যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল? ২০১৯ সালে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০২১ সালের ২৬ মার্চ। তাতে দেখা যায়, ৮৪১৯ জন চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু তা নিয়েই মামলা হয়। চাকরি না পাওয়া বেশ কয়েকজন প্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হন। পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের বিরুদ্ধে তাঁরা মামলা করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালে। ট্রাইবুনাল পুলিশ কনস্টেবলদের নিয়োগ সংক্রান্ত ত্রুটি শুধরোনোর নির্দেশ দেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে।
তারপরেই ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয় দ্বিতীয় মেধা তালিকা। সেই তালিকা মেনেই হয় নিয়োগ। বুধবার কলকাতা হাই কোর্ট এই দ্বিতীয় তালিকাটি খারিজ করে দেয়। পরিবর্তে প্রথম তালিকাটিকেই মান্যতা দিয়েছে। স্যাট বা স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা-ও খারিজ করেছে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। তাতেই সংশয় দেখা দিয়েছে, অনেকের চাকরি যাবে বলে।
কিন্তু কেন এমন হল? অভিযোগ, ২০১৯ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশ কনস্টেবলের ৮৪১৯ পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওয়েস্ট বেঙ্গল পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। ২০১৯ সালের ৪ অগস্ট প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়া হয়। ২০২০ সালের ২২ জুন বোর্ড বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, ওই বছর ১৩ জুলাই থেকে এলাকাভিত্তিক নির্দিষ্ট জায়গায় ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। পরে ওই বছর লকডাউন ঘোষণা হওয়ায় ইন্টারভিউ পিছিয়ে ১২ অগস্ট থেকে নেওয়ার কথা বলা হয়। ইন্টারভিউতে ডাকা হয় ১২,৭৮৬ জনকে। অভিযোগ ওঠে, ইন্টারভিউ নেওয়ার ক’দিন আগে অনেক প্রার্থীর কাছে হোয়াট্সঅ্যাপে মেসেজ যায়। সেখানে ইন্টারভিউ বোর্ডে কারা রয়েছেন তাঁদের নাম এবং পরিচয় জানানো হয়। ফলে ইন্টারভিউ বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বেআইনি ভাবে নিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হয়। এমনকী সংরক্ষণ নীতি মানা হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে।
ফলে ২০২০ সালের ১৫ অক্টোবর সল্টলেকের অফিসে যে ৮৪১৯ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয় তাকে চ্যালেঞ্জ করেন কয়েকজন পরীক্ষার্থী। তারপর স্যাটের নির্দেশে দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকাও এবার বাতিল হল হাইকোর্টের নির্দেশে। পরিবর্তে প্রথম তালিকা মান্যতা পেল। উল্লেখ্য, প্রথম তালিকায় যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, দ্বিতীয় তালিকায় তাঁরা সকলে চাকরি পাননি। পরিবর্তে অন্য অনেকে চাকরি পান। ফলে তাঁদের চাকরি থাকবে কিনা সেই আশঙ্কা তৈরি হল।


