তালিবানি ফতোয়ায় আফগানিস্তানের মহিলাদের দিন কাটছে কার্যত কারাগারে কয়েদিদের মতো!

তালিবানি ফতোয়ায় আফগানিস্তানের মহিলাদের দিন কাটছে কার্যত কারাগারে কয়েদিদের মতো!
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: আফগানিস্তানের মহিলাদের উপর তালিবানরা যে মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার চালাচ্ছে, তারজন্য তীব্র নিন্দা করেছে জাতি সংঘের মহিলা পরিষদের প্রধান সিমা বাহাউস। তিনি জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে মহিলাদের উপর লিঙ্গ বৈষম্যের আঘাত হানছে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই জাতি সংঘকে সরব হতে হবে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি বলেছেন, তালিবানরা পঞ্চাশটিরও বেশি ভয়ঙ্কর আদেশ সেই দেশের মহিলাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। যার মধ্যে মহিলাদের পরিবারের পুরুষদেরও মদত রয়েছে। এই ঘটনায় মহিলাদের, আরও স্পষ্ট করে বললে, কমবয়সী মহিলাদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে। এবং তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়িয়ে তুলছে। এমনকী নিজেদের বাড়িতেও আফগানিস্তানের মহিলারা কয়েদিদের মতো দিন কাটাচ্ছেন।
তিনি বলেছেন, ‘‘আফগান মহিলাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাঁরা রীতিমতো আতঙ্কে রয়েছেন। নিজের বাড়িতেই তাঁদের অন্ধকার কারাগারে বন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে। তাঁদের না আছে কোনও আশা, না আছে কোনও ভবিষ্যৎ। আন্তর্জাতিক আইনে বর্ণবৈষম্যকে ‘বিচ্ছিন্নতা’ হিসাবেই সজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তানে ‘লিঙ্গ বৈষম্য’ যে হারে বেড়ে চলেছে তাতে বর্ণবাদের মতো এই লিঙ্গ বৈষম্যকেও আইনের মধ্যে আনা উচিত, বলে জাতি সংঘের বিশেষজ্ঞ, শীর্ষকর্তা ও কর্মীরা মনে করছেন। বাহাউসের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের কমিটি কাউন্সিলকে অনুরোধ করেছে, আন্তর্জাতিক আইনে ‘লিঙ্গ বৈষম্য’-কে সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হোক। বাহাউস বলেন, ‘‘লিঙ্গ নিপীড়নের জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কোনও আইন নেই। তালিবানরা মহিলাদের অধিকারের উপর সুপরিকল্পিতভাবে আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এর কোনও নাম বা সজ্ঞায়িত করা উচিত যাতে এর জবাব আমরা সবাই দিতে পারি।’’
তিনি আরও জানিয়েছেন যে, সম্প্রতি জাতিসংঘের ইন্টারন্যাশনাল অফিস ফর মাইগ্রেশন আফগানিস্তানের পাঁচশো মহিলার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। সেই সাক্ষাৎকারে ৪৬ শতাংশ মহিলা জানিয়েছেন, তালিবান সরকারকে কোনওভাবেই স্বীকৃতি দেওয়া উচিত নয়। আর পঞ্চাশ শতাংশ মহিলা মনে করেন, তালিবান সরকারকে তখনই স্বীকৃতি দেওয়া উচিত যখন তারা কর্মসংস্থান, শিক্ষা এবং মহিলাদের অধিকারকে মান্যতা দেবে। বেশিরভাগ মহিলাই জানিয়েছেন যে, তালিবানি ফতোয়ায় নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মহিলাদের উপর বিধিনিষেধের কারণে বাল্য বিবাহ ও শিশু শ্রম এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা আরও বেড়ে গেছে। বাড়ছে আত্মহত্যার ঘটনাও।


