প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ ব্রাজিল, প্রাণ হারিয়েছেন ৩১জন মানুষ, আশঙ্কা বন্যার

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দক্ষিণ ব্রাজিল, প্রাণ হারিয়েছেন ৩১জন মানুষ, আশঙ্কা বন্যার
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: ঘূর্ণিঝড়ে বিপর্যস্ত দক্ষিণ ব্রাজিল। ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পরে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৩১জন মানুষ। প্রবল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘর-বাড়ি। এরইসঙ্গে দেখা দিয়েছে বন্যাও। বেশ কয়েকটি শহরের রাস্তা-ঘাট জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। আটকে পড়েছে যানবাহন। সংবাদসংস্থা জানাচ্ছে, গত সোমবার রাত থেকে দক্ষিণ ব্রাজিলে আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড়। যার জেরে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ষাটটির বেশি শহর।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এই রাজ্যে মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ। রিও গ্র্যান্ডে দো সুল গভর্নর এডুওয়ার্ডো লেইট জানিয়েছেন, ‘‘ঘূর্ণঝড়ের জেরে অন্তত ৩১জন মানুষ মারা গেছেন। যা এই রাজ্যের সর্বাধিক। ষাটটিরও বেশি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন যে, মুকুম শহরের প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ বসবাস করেন। আর ঘূর্ণিঝড়ের কারণে একটি বাড়িতেই পনেরো জন নিহত হয়েছেন। গত তিনদিন ধরে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৬০০ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, আক্রান্ত পরিবারের মানুষরা তাদের বাড়িতে উঠে সাহাযে্যর প্রার্থনা করছেন। নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি বাড়ি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কোনও নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার অনুরোধ করেছে প্রশাসন। শহরের গভর্নর জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে একজন মহিলাও আছেন। তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর দেহ নদীতে ভেসে গিয়েছে। লেইট জানিয়েছেন, ‘‘টাকুরিয়া নদীতে উদ্ধারকার্য চলার সময় এক মহিলা মারা যান। তাঁর পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাসা আমার নেই।’’ জানা গেছে, ঝড়ের তাণ্ডবের পর নদীতীরবর্তী অঞ্চল কার্যত ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। বেশিরভাগ বাড়ি ভেঙে গেছে। ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের কবলে পড়া মুকুমের বাসিন্দা মার্কোস অ্যান্তোনিও গোমেজ বলেন, ‘‘জল এত দ্রুত বেড়ে যাচ্ছিল যে কিছু করার ছিল না। আমাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। সব শেষ হয়ে গেছে।’’
মুকুমের প্রশাসন চেষ্টা করছে বিপর্যস্ত স্থানীয় মানুষদের কাছে দ্রুত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার। বছর পঞ্চান্নর মুকুমের ব্যবসায়ী গোমস বলেন, ‘‘গত পনেরো বছরের মধ্যে চতুর্থবার বন্যায় আমার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হল। এখনও পর্যন্ত ক্ষতির দিক থেকে এটাই সর্বাধিক।’’ তিনি জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে ফের বন্যার আশঙ্কা করছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এখানে আমাদের আর বঁাচার কোনও আশা নেই। ফের বন্যা হবে। এই স্থান ছেড়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।’’ স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মুকুমে ফের ভারী বৃষ্টি আঘাত হানতে চলেছে। রাজ্যের মধ্য এবং দক্ষিণ অঞ্চল অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন তাদের সতর্কবার্তায় জানিয়েছে, বন্যা অবধারিত। জাকুই, কাই এবং টাকুয়ারি নদীর জল বেড়ে গেছে।


