আতঙ্কে আশা কর্মীর ফোন, ‘বাঁচান আমাকে ম্যাডাম, ওরা মেরে ফেলবে’, আবাস যোজনায় সার্ভে করায় বাড়ি ঘেরাও করে মেরে ফেলার হুমকি আশা-কর্মীকে

আতঙ্কে আশা কর্মীর ফোন, ‘বাঁচান আমাকে ম্যাডাম, ওরা মেরে ফেলবে’, আবাস যোজনায় সার্ভে করায় বাড়ি ঘেরাও করে মেরে ফেলার হুমকি আশা-কর্মীকে
20 Dec 2022, 04:00 PM

আতঙ্কে আশা কর্মীর ফোন, ‘বাঁচান আমাকে ম্যাডাম, ওরা মেরে ফেলবে’, আবাস যোজনায় সার্ভে করায় বাড়ি ঘেরাও করে মেরে ফেলার হুমকি আশা-কর্মীকে

 

আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: ম্যাডাম আমাকে বাঁচান। এরা আমাকে মেরে ফেলবে। প্রাণভয়ে চরম আর্তনাদ করছেন এক আশা কর্মী। ঘটনাটি মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া খামারমাটি তুলসীপুর এলাকার। আশাকর্মী তহমিনা খাতুন এর বাড়ি ঘিরে ফেলেছেন বহু গ্রামবাসী। প্রাণ বাঁচানোর জন্য দপ্তরের অফিসারকে ফোন করে কাকুতি মিনতি করে যাচ্ছেন।

কেন এই পরিস্থিতি? তার কারণ সরকারের নয়া নির্দেশিকা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সরকারের নির্দেশ মেনে গ্রামে ঘুরে ঘুরে সার্ভে করছেন আশাকর্মীরা। সেরকমই মুর্শিদাবাদের আশা কর্মী তহমিনা খাতুন সার্ভে করার পরে আবাস যোজনা তালিকা থেকে স্থানীয় বহু বাসিন্দাদের নাম কেটে যায়।আর সেই নাম কেটে যাওয়া বাসিন্দারাই ক্ষিপ্ত হয়ে গিয়ে ওই আশাকর্মীর বাড়ি ঘিরে ফেলেন।  তখনই প্রাণভয়ে ওই আশাকর্মী দপ্তরের আধিকারিককে ফোন করে তাকে বাঁচানোর জন্য আবেদন জানান।

 আবাস যোজনায় ন্যায্য উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি করার জন্য গ্রামে ঘুরে ঘুরে যে সার্ভে করা হচ্ছে তাতে তিনটি স্তরে সার্ভে হচ্ছে।  সেক্ষেত্রে আশাকর্মী, বিডিও, এসডিও, থানার আইসি এবং ডিএম। বিভিন্ন পদ্ধতিতে সরকারি আমলারা এই যাচাইকরণের কাজ করছেন।  কিন্তু সেখানে রাজ্য জুড়ে দেখা যাচ্ছে সফট টার্গেট হয়ে উঠেছেন আশাকর্মীরা। কারণ তারা গ্রামেই থাকেন। আর তারা যখন প্রথম সার্ভে করতে যান গ্রামবাসীরা তাদেরকেই ধরার সুযোগ পায়। বিডিও, এসডিও, থানার আইসিদের তুলনায় আশাকর্মীদের উপরেই রাগ গিয়ে পড়ে। আর তাই তারা এই ঘটনায় হামলার শিকার হচ্ছেন। যদিও পুলিশি নিরাপত্তার কথা বলা হয়েছে কিন্তু সেটা কতখানি সম্ভব? সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। 

কারণ আশাকর্মীরা যে গ্রামে বাস করেন সেখানেই তাদের জীবন যাপন করতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে আশাকর্মীর হাত না থাকলেও তাদের উপরই মূল ক্ষোভ গিয়ে পড়ছে। আর তাই তারাই হামলার শিকার হচ্ছেন। তবে আশাকর্মীদের মধ্যে সবাই যে সঠিক পদ্ধতিতে চলছেন এটাও সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়।  অনেকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে হয়তো কিছু কিছু ক্ষেত্রে সত্যি।  কিন্তু সেই বিষয়কে প্রশাসনকে উদ্যোগ নিয়েই সমস্যার সমাধান করতে হবে। এ রকমই ঘটনা মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া সংলগ্ন গ্রামে।

 এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই আশাকর্মীর আত্মীয়দের নাম আবাস যোজনা তালিকায় রয়েছে। তিনি ৭০ জনের নাম কেটে নিজের আত্মীয়দের নাম তুলেছেন। যাদের অনেকেরই পাকা বাড়িও রয়েছে। এই বিষয়েই একজন বাসিন্দা বলেন, বিডিও এখানে এসে সার্ভে করুক। দরকারে সকলের নাম কেটে দিক। যদিও ওই আশাকর্মী জানান, যারা যোগ্য তাদেরই নাম রয়েছে। গ্রামের মানুষ ভুল বলছেন।  ভোরবেলা থেকে এলাকার মানুষ বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে হুমকি দিচ্ছে।  বিডিও-কে জানিয়েছি। পুলিশকে জানিয়েছি। মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছি। যখন গ্রামবাসীরা তার বাড়ি ঘিরে ধরেছেন তাকে আতঙ্কে ফোনে বলতে শোনা যায়, ম্যাডাম বাঁচান। যদি বাঁচাতে চান গ্রামে তদন্ত করতে আসুন। যেভাবে ট্রেনিং দিয়েছেন সেভাবেই তো কাজ করেছি। গ্রামের লোক বাড়িতে চড়াও হয়েছে। ঘটনাস্থলে হরিহরপাড়া থানার পুলিশ এসে বিক্ষোভকারীদের দূরে সরিয়ে দেয়।

Mailing List