রেহান কৌশিকের কবিতা – ঘোড়া ও মানুষ

রেহান কৌশিকের কবিতা – ঘোড়া ও মানুষ
কোনো একদিন
রাজপথ আরও লাল হবে
সহস্র পায়ের দাগে ফিরে পাবে নিজের স্পন্দন
মাটি ও মানুষ জানে কীভাবে জন্মায় অধিকার
কীভাবে স্বপ্নে ও শস্যে লেখা হয় নিজস্ব অর্জন!
শ্রমের স্বপ্নেরা জেনো, মিথ্যে হয়নি কোনওদিন
রেখে গেছে ইতিহাস পৃথিবীর সুদীর্ঘ রাস্তাতে
আজও তাই ধানমাঠে, কলের বাঁশিতে
পাহারায় রাত জাগে অমোঘ-অক্ষর ---
উই শ্যাল ওভারকাম সাম ডে…
…….
ছুঁয়ে থাকবার দিন
দিকশূন্যপুরের দিকে নয়
রাস্তাকে বলেছি তুমি মানুষের দিকে চলো।
নির্জনতার সৌখিন বারান্দায় নয়
গিটারকে বলেছি তুমি মানুষের জমায়েতে বাজো।
চিৎকারের সঙ্গে আরও ঘন করে তুলতে হবে
আমাদের সমস্ত চিৎকার।
বাস্তুহারা হচ্ছে লোকজন
গান-পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ঝুঁকে আছে আমাদের দেশ,
ত্রিশূল এবং তরবারি
কোরান এবং গীতা দিয়ে
খিদের যন্ত্রণাকে কি ভোলানো সম্ভব?
কাজ নেই, পুঁজিপতিদের
নেওয়া ঋণে সর্বস্বান্ত আজ এই দেশ।
বলো তো এখন কি মানায়
দিকশূন্যপুরের দিকে চলে যাওয়া কারও?
এখন কি সমীচীন বারান্দায় বসে
একা-একা গিটার বাজানো?
যত কবি আছ দিকে দিকে
যত শিল্পী আছ পথে-ঘাটে
গায়ক রয়েছ যত মহল্লার পর মহল্লায়
শব্দে-রংয়ে-কন্ঠস্বরে শুরু হোক বারুদ-যাপন।
নির্জনতা নয়, মানুষের
বুকে ও পাথরে আজ ছুঁয়ে থাকবার দিন।
………
ঘোড়া ও মানুষ
চোখ থেকে বিষণ্ণতা মুছে গেছে সব
বাদামি ঘোড়ার দল ফিরে যাচ্ছে অরণ্যে আবার।
মানুষেরই শুধু তাড়া নেই কোনো।
রাত্রিদিন ছায়ার ভিতর
নিজেকে শিকার করে বেঁচে-বর্তে থাকে...
রাষ্ট্র-দেশ-মাটি-কাঁটাতার---
কত রকমের অস্ত্র আবিষ্কার করে
নিজে হাসে, অন্যকে কাঁদায়।
ঘোড়া ও মানুষ, উভয়েই প্রাণী।
ঘোড়া ফিরে যেতে জানে, মানুষ জানে না
মানুষ চেনে না তার কতদূরে বাড়ি
কোথায় রয়েছে তার প্রকৃত আকাশ
কোথায় রয়েছে তার রক্তের সন্ততি!
……..


