দুর্নীতি ধরতে পথে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, বিএলআরও অফিসে ঘুঘুর বাসা ভাঙবে কী?

দুর্নীতি ধরতে পথে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, বিএলআরও অফিসে ঘুঘুর বাসা ভাঙবে কী?
31 May 2022, 03:00 PM

দুর্নীতি ধরতে পথে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী, বিএলআরও অফিসে ঘুঘুর বাসা ভাঙবে কী?

 

মানুষের হয়রানি রুখতে দুয়ারে সরকার চালু করেছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প এটি। এবং প্রকল্পের ফলে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন এটাও বলা যেতে পারে দ্বিধাহীন ভাষায়।

তবু প্রশ্ন থাকে। প্রশ্নটা হল, সব ক্ষেত্রেই কী মানুষ প্রাপ্য পরিষেবা পাচ্ছেন? হয়রানির শিকার হচ্ছেন না? ঘুরপথে অর্থের কারবার চলছে না?

প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তর কী পেয়েছিলেন? তার প্রমাণ মিললো পুরুলিয়ার প্রশাসনিক সভায়। বলরামপুর ও হুড়া-র বিএলআরও-দের দাঁড় করালেন। তাঁরা ওই পদে ওই জায়গায় কতদিন আছেন জানতে চাইলেন। আর তারপরই জানালেন, মিউটেশন বিএলআরও অফিসে হচ্ছে না। তা হচ্ছে অফিসের পাশের দোকানে। তার জন্য গরিব মানুষের কাছ থেকে হাজার হাজার টাকা চাওয়া হচ্ছে। যাঁদের কাছে টাকা দাবি করা হয়েছিল, যাঁরা হয়রানির শিকার হয়েছিলেন, তাঁদের ওই প্রশাসনিক সভায় হাজির করিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর ‘জলজ্যান্ত’ প্রমাণ দেখালেন রাজ্যের মুখ্যসচিব থেকে শুরু করে জেলার জেলাশাসকের সামনে!

কিন্তু এটি কী শুধুই পুরুলিয়ার বলরামপুর ও হুড়ার চিত্র? জমির মিউটেশন থেকে শুরু করে জমি সংক্রান্ত যে কোনও কাজে বিএলআরও অফিসে যাওয়া মানুষের অভিজ্ঞতা কিন্তু অন্য কথা বলছে। তাঁদের মতে, এটি শুধু রাজ্যের দু’টি জায়গায় নয়। বরং সর্বত্রই বলা যায়। একই পদ্ধতিতে হাজার হাজার টাকা দাবি করা হয় মানুষের কাছে। নিরূপায় হয়ে মানুষ সেই টাকা দেন। নাহলে মেলে না কাজ। দুর্ব্যবহার করা হয় সাধারণ মানুষের সঙ্গে। সাধারণ মানুষ যে অভিযোগটি এতদিন প্রশাসনের দুয়ারে দুয়ারে করেও সুফল পাননি, এবার খোদ মুখ্যমন্ত্রী তার প্রমাণ দাখিল করলেন। তারই সঙ্গে পদস্থ আধিকারিকদের নির্দেশ দিলেন, প্রয়োজনে বদলি করতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র ক্ষোভেরও বহিঃপ্রকাশ দেখেছেন প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিক থেকে বিএলআরও-রা। অনেকেই আশা প্রকাশ করছেন, হয়তো এবার বিএলআরও অফিসে গেলে সুরাহা মিলবে। কিন্তু নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। কারণ, পুরুলিয়ার ক্ষেত্রে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী প্রমাণ সংগ্রহ করেছিলেন। সাধারণ মানুষ এমন হয়রানির শিকার হলে কার কাছে জানাবেন? প্রশাসনের উচ্চ পদে জানিয়ে সুরাহা মিলবে তো? এই প্রশ্নটা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। তবে যদি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর বিএলআরও অফিস সঠিক কাজ করে, তাহলে কিন্তু রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষের মুখে হাসি ফুটবে। যদিও ক’দিন পরেই জানা যাবে বিএলআরও অফিসের কাজের পদ্ধতি। কারণ, এবার হয়তো সাধারণ মানুষও সাহস পেয়েছেন। হয়তো প্রতিবাদে সরবও হতে পারেন। আর তখনই ফের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এমন অভিযোগ পৌঁছতে থাকবে।

Mailing List