মিনাক্ষীর উত্তর খুঁজছে নন্দীগ্রাম? তাহলে কিন্তু ভিভিআইপিদেরও বিপদ

মিনাক্ষীর উত্তর খুঁজছে নন্দীগ্রাম? তাহলে কিন্তু ভিভিআইপিদেরও বিপদ
এবার নির্বাচনে নন্দীগ্রামকে ‘ভিআইপি’ সেন্টার আখ্যা দিয়েছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। কারণ, নন্দীগ্রাম আসনে এবার শাসক তৃণমূলের প্রার্থী খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বিপরীতে মুখ্যমন্ত্রীরই এককালের সৈনিক বর্তমান বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
ভিভিআইপিদের এই লড়াইয়ের মাঝে বামফ্রন্ট কিন্তু ভরসা রেখেছে এক তরুণীর ওপর। তিনি হলেন যুবনেত্রী মিনাক্ষী মুখার্জী। যিনি দুই ভিভিআইপির মাঝে সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী। না, হাতে সময় বেশি পাননি। কারণ, প্রথম দফায় নন্দীগ্রামে ভোট হলেও নন্দীগ্রামের প্রার্থী ঠিক করতে একটু বেশি সময় নিয়েছিল সংযুক্ত মোর্চা। কিন্তু অল্প সময়েই নন্দীগ্রাম জুড়ে কিছু প্রশ্ন রাখতে সক্ষম হয়েছেন সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মিনাক্ষী।
প্রশ্নগুলি কী? নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের ভূমিকা কী? বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পেরেছিলেন কি না। বাড়ির মেয়েরা সত্যিই সুরক্ষিত কি না। বেকারদের চাকরি মিলেছে কি না। উত্তরও দিচ্ছেন তিনিই। বলছেন, ‘‘চাকরি মেলেনি। পঞ্চায়েতে মানুষ ভোট দিতে পারেননি। ধর্ষণ, অত্যাচার, নিপীড়ন চলছেই, তা বন্ধ হয়নি।’’
আর তেভাগা আন্দোলনের সাক্ষী এই নন্দীগ্রামের এতদিন কে এই স্টিম রোলার চালিয়েছে। মিনাক্ষীর কথায়, ‘‘যিনি তা করেছেন, তিনি আজ অন্য শিবিরে।’’ যাঁরা নিজেরা শিবির বদল করে তাঁরা কিভাবে মানুষের সেবা করবে প্রশ্ন তুলে বলছেন, ‘‘আমি কোথাও পালাব না। আমি আপনাদের সঙ্গেই থাকব। সংযুক্ত মোর্চার সরকার এলে চাকরি হবে। মানুষ নিজে তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করে ভোট দিতে পারবেন।’’
প্রশ্ন তুলেছেন, চাকরির দাবিতে আন্দোলন করতে গেলে কেন পুলিশ লাঠিপেটা করবে? কেন মইদুলকে মরতে হবে? সরকার তাঁর স্ত্রীকে যে চাকরি দিয়েছে, সেই নিয়োগপত্রে মেমো নম্বর পর্যন্ত নেই বলে জানিয়েছেন মিনাক্ষী। তা জানিয়ে বলেছেন, ‘‘যে কোনও দিন ওই চাকরি কেড়েও নেওয়া হতে পারে।’’
তারপরেই মানুষের কাছে তাঁর আবেদন,কাকে ভোট দেবেন সেটা বেছে নিতে হবে আপনাদেরই। এভাবেই ভাঙাবেড়িয়া থেকে বিরুলিয়া – নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের কোনে কোনে ঘুরে শুধুই প্রশ্ন রাখছেন মিনাক্ষী। যে প্রশ্নের উত্তরও কিছু ক্ষেত্রে মানুষকে দিচ্ছেন। আর বাকিটা ছেড়ে দিচ্ছেন মানুষের ওপরেই।
বর্তমান নির্বাচন পরিস্থিতিতে নন্দীগ্রাম কিন্তু উত্তপ্ত। সে উত্তাপ তৃণমূল ও বিজেপি- দুই শিবিরেই। মুখ্যমন্ত্রীর আহত হওয়ার পর থেকেই যা শুরু হয়েছে। মারামারি, ভাঙচুর একাধিক ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সন্তর্পণে তা এড়িয়ে সংযুক্ত মোর্চার মিনাক্ষী কিন্তু প্রশ্ন ছড়িয়ে রাখতে কোনও এলাকাকেই বাদ দেননি।
সুবক্তা হিসেবে পরিচিত মিনাক্ষীর মুখে নেই কোনও কটু কথা। বিগত দিনগুলিতে রাজ্য সরকারের ভূমিকা, দলবদলের ইতিহাস (তৃণমূল-বিজেপির) আর সংযুক্ত মোর্চার সরকার হলে তাঁরা মানুষের কী করবে, সে কথাজানানোর পাশাপাশি সুললিত ভাষায় প্রশ্ন উত্থাপন করে চলেছেন।
নন্দীগ্রামের মানুষ কিন্তু শিক্ষার দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই। তাই এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজলে দুই বিভিআইপি প্রার্থীকে যে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।


