প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক! দিল্লি চললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক! দিল্লি চললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে সোমবার ৪ দিনের সফরে দেশের রাজধানীতে পা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই সফরকালের দিকেই তাকিয়ে আছে গোটা বাংলা ও দেশ। মূলত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তাঁর বৈঠককে ঘিরে। যদিও এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে জানানো হয়নি সেই বৈঠক ঠিক কবে আর কখন হবে। তবে আগামিকালই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎ হবে। সেই সময়েই যদি তাঁদের মধ্যে কথা হয়ে যায় তাহলে আলাদা করে আর কোনও বৈঠক নাও হতে পারে। তবে এরই মধ্যে নজর কেড়েছে মমতার রাজস্থানে ১ দিনের সফর উপলক্ষ্যে সেখানকার রাজ্য সরকারের তৎপরতা। কেননা সেখানে এমন কিছু নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে যা দেশের অতি বড় ভিভিআইপিদের জন্যই করা হয়ে থাকে। কার্যত মমতাকে ঘিরেই যে মোদি পরবর্তী রাজনীতির চক্র ইতিমধ্যেই ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে সেটা ক্রমশ পরিষ্কার হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
সোমবার সকালেই দিল্লির পথে পা বাড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লির বিমানবন্দরে নেমেই তিনি সোজা চলে যাবেন রাইসিনা হিলসের রাষ্ট্রপতি ভবনে জি-২০ বৈঠকে যোগ দিতে। সেখানে থাকবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। সেখানেই মমতা-মোদি কথা হয় কিনা সেই দিকেই তাকিয়ে থাকবেন সকলে। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে আজমের যাবেন মমতা। আর তাঁর সেই সফর ঘিরে এখন আজমের জুড়ে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনি গড়ে তোলা হয়েছে যা জাতীয় স্তরের রাজনীতির কারোরই চোখ এড়িয়ে যাচ্ছে না। মমতা আজমের ও পুষ্কর সফর ঘিরে রাজস্থানের কংগ্রেস পরিচালিত অশোক গেহলটের সরকার যে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে ওই দুই তীর্থস্থানে তা সাধারণত দেশের কোনও ভিভিআইপি ব্যক্তির জন্য করা হয়ে থাকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই সফরের জন্য বিশেষ রুট তৈরি করেছে গেহলট প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর যাত্রাপথের পুরোটাই নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে রাজস্থান পুলিসের বিশেষ টিম।
মমতার ওই সফরে নিরাপত্তার বিষয়টি তদারকি করতে কলকাতা থেকে পুষ্করে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছেন ৫ আধিকারিক। স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখে নেবেন তাঁরা। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ব্রহ্মা মন্দির দর্শনের সময় তাঁর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মন্দির চত্বর দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গেহলট প্রশাসন। পুষ্করের ব্রহ্মা মন্দিরে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবেন পুজোও। তাঁর নিরাপত্তায় গেহলট সরকারের যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছে তাকে বিরল রাজনৈতিক সৌজন্য হিসেবেই দেখছে রাজস্থান প্রশাসনের একাংশ। কিন্তু তাতে জল্পনা থামছে না। বরঞ্চ জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে মমতাকে ঘিরে জল্পনা আর আগ্রহ ক্রমশ বাড়ছে। আর এখানেই গুরুত্ব পেয়ে গিয়েছে আগামিকালের মোদি-মমতা সাক্ষাতের বিষয়টি। মঙ্গলবারই দিল্লিতে ফিরবেন মমতা।
বুধবার তিনি দিল্লিতে দলের সাংসদের নিয়ে একটি বৈঠক করবেন। সেই বৈঠক মূলত সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে তৃণমূলের ভূমিকা কী হবে সেটা ঠিক করতেই ডাকা হয়েছে। বৈঠকে থাকবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মনে করা হচ্ছে এবারের বৈঠকেই দলের সাংসদদের তীব্র মোদি বিরোধিতার লাইন থেকে সরে আসার নির্দেশ দিতে পারেন তৃণমূলনেত্রী। শুধু তাই নয়, ওই অধিবেশনকালে তৃণমূলের রণকৌশল কী হবে, তৃণমূল কোন কোন বিষয়গুলি সংসদে উত্থাপন করবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে মিলে ফ্লোর ম্যানেজমেন্ট কীকরবে তা নিয়েও ওই বৈঠকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে পারেন মমতা। পরদিন ৮ তারিখেই রয়েছে মোদি-মমতার বহু প্রতীক্ষিত বৈঠকটি। তবে সেই বৈঠকের বিষয়টি এখনও সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। মনে করা হচ্ছে আগামিকালই তাই মোদি-মমতা বৈঠক হয়ে যেতে পারে রাষ্ট্রপতি ভবনেই। বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে মমতার।


