বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতাই সেরা, মেনে নিলেন সোনিয়াও

বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতাই সেরা, মেনে নিলেন সোনিয়াও
27 Aug 2020, 06:11 PM

বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতাই সেরা, মেনে নিলেন সোনিয়াও

 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়াই করতে জানেন। লড়াই করতে পারেন। শুধু একটি রাজ্যে নয়। একটি রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও সারা দেশ জুড়ে লড়াই করতে জানেন। তা আবারও প্রমাণ হয়ে গেল। এবার তা প্রমাণ করে দিলেন সোনিয়া গান্ধিও। যিনি আবারও সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হয়েছেন সদ্য। সভাপতি হওয়ার পরেই একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। যে বৈঠকে কংগ্রেশ শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা ছিলেন। ছিলেন কংগ্রেসের সমর্থনে যে সরকার রয়েছে যেদু’টি রাজ্যে, সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও। আর ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেও মধ্যমণি-র ভূমিকায় দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকী, যে বৈঠক পরিচালনা করার কথা সোনিয়া গান্ধির, সেই বৈঠক পরিচালনা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং তা পরিচালনা করার দায়িত্ব নিজে থেকে ছেড়ে দিলেন স্বয়ং সোনিয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তাঁকেই সভা পরিচালনা করার আবেদন জানালেন। এই ঘটনা ফের প্রমাণ করে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। এবং আগামি দিনে তিনিই যে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন, দেখা গেল সেই ইঙ্গিতও।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের ইতিহাস নতুন নয়। দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটেছিল তাঁরই লড়াইয়ের ফলে। যে লড়াই দু’চার দিনের ছিল না। একটানা লড়তে হয়েছিল। আর সেই লড়াইয়ে প্রথমে কাউকেই তিনি সঙ্গে পাননি। তাই বাধ্য হয়ে কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে নতুন দল গড়েছিলেন তিনি। তখন নানা জনে নানা কথা বলেছিল। মূল স্রোত থেকে বেরিয়ে অনেকই নাকি পিছু হঠেছিলেন, সে প্রমাণও তুলে ধরেছিলেন তাঁরা। কিন্তু লড়াকু মমতা সে সবে কান না দিয়েই লড়েছিলে‌ন। বামফ্রন্টের সংগঠন তখন প্রত্যন্ত গ্রামেও সংঘবদ্ধ। কেউ বিরোধী রাজনীতি করলেই তাঁকে সমস্যায় পড়তে হত। আর তখনই রাজ্যের একপ্রান্ত থেকে আর একপ্রান্তে একা ছুটে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মীরা বিপদে পড়লে রাতেও প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে হাজির হয়েছেন। শুধু কলকাতায় নয়, কেশপুর, গড়বেতা, গোঘাট, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম – কোথায় যাননি। একটানা ২৬ দিন অনশন পর্যন্ত করেছেন। বিনিময়ে মানুষের আশীর্বাদও পেয়েছেন প্রাণভরে। তাই না দীর্ঘ ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসন থেকে রাজ্যকে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।

এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তাঁর লড়াই বিজেপি-র বিরুদ্ধে। সে ক্ষেত্রেও অনেক আগে থেকে প্রস্তুত করেছিলেন মমতা। ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনের সে চেষ্টার কথা সকলের জানা। তিনি যে এ কাজেকতটা সফল তার সাক্ষী রয়েছে ব্রিগেড। দেশের বহু বিরোধী নেতা ব্রিগেডের সেদিনের সমাবেশে হাজির হয়েছিলেন। নেতা মেনেছিলেন তাঁকেই। মমতার নেতৃত্বের দেশ জুড়ে বিরোধী জোট লড়াই করার কথা বলেছিল। আর করোনা আবহেও দেখা গেল একই চিত্র। সোনিয়া গান্ধিও সাত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে মমতাকে সভা পরিচালনার দায়িত্ব দিলেন। আবারও সে দৃশ্য দেখল দেশ। যা থেকে প্রমাণ হয়ে গেল বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে মমতাকে কতটা ও কিভাবে চাইছেন সোনিয়া গান্ধি। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্ব তো খুশি হবেই, তারই সঙ্গে দেশজুড়ে বিরোধী নেতারাও একটা অন্য বার্তা পাবেন বলেই সকলের অভিমত। অর্থাৎ আগামি দিনে বিজেপি বিরোধী লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে নেতৃত্বে থাকতে চলেছেন, তার মাটি আরও কিছুটা শক্ত হল বলা যায়।   

Mailing List