ফিশ হাইড্রোলাইসেট কী এবং এটি তৈরীর পদ্ধতি সম্পর্কে, জানুন বিস্তারিত

ফিশ হাইড্রোলাইসেট কী এবং এটি তৈরীর পদ্ধতি সম্পর্কে, জানুন বিস্তারিত
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: আমরা সকলেই জানি মাছে ভাতে বাঙালি। তবে এটা জেনে আরও আশ্চর্য হবেন যে মাছ শুধুমাত্র খাওয়ার জন্যেই ব্যবহার করা হয় না। মাছ দিয়ে আরও বেশ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস তৈরি করা হয়। চাষের জন্য মাছ অত্যন্ত উপকারী একটি জিনিস। কারণ এই মাছ দিয়েই তৈরি করা হয় উন্নত মানের সার। যা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তৈরি হওয়ার কারণে উদ্ভিদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
এমন বহু মাছের প্রক্রিয়াকরণ কারখানা রয়েছে যেখানে মাছের দেহের একাধিক অংশ অব্যবহার্য হিসেবে পড়ে থাকে। সেই সমস্ত অংশগুলিকে সংগ্রহ করে খুব সহজেই প্রাকৃতিকভাবে সার উত্পন্ন করা যায়। আর এর মাধ্যমে একদিকে যেমন কৃষিতে উন্নতি হবে তেমনই অর্থ উপার্জনের পথ সুগম হবে। মাছ থেকে যে জৈব সার তৈরি করা হয় তাকে ফিশ হাইড্রলাইসেট বলে। মূলত কম্পোস্টিং, ভার্মি কম্পোস্টিং, গাঁজন প্রক্রিয়া এবং অনুজীব সংগ্রহ এই প্রক্রিয়াগুলির মাধ্যমে মাছ থেকে সার তৈরি করা হয়। তবে আজ বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ফিশ হাইড্রোলাইসেট উত্পাদন সম্পর্কে।
মাছের যে অব্যবহৃত অংশ ব্যবহার করা হয়:
ফিশ হাইড্রোলাইসাইড তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা হয় মাছের মাথা, অন্ত্র, চামড়া, কাঁটা প্রভৃতি। এমনকি গোটা মাছ ব্যবহার করা হয় অনেক ক্ষেত্রে। এছাড়াও উপকরণ হিসেবে প্রয়োজন হয় ক্লোরিন বিহীন জল, গ্রাইন্ডার মেশিন, ল্যাকটো ব্যাসিলাস, গুড় বা ব্রাউন সুগার। চিনিও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ফিশ হাইড্রোলাইসেট তৈরির পদ্ধতি:
১. সংগ্রহ করা মাছের মাথা, অন্ত্র, চামড়া অথবা গোটা মাছ গ্রাইন্ডারের মধ্যে কেটে কেটে দিতে হবে।
২. একেবারে মিহি করে পেস্ট করে নিতে হবে সেগুলি। আর তারপর সেখানে যোগ করতে হবে ক্লোরিন বিহীন জল অর্থাত্ এক লিটার মাছের কিমায় ৩ লিটার জল দিতে হবে।
৩. এই মিশ্রণটির সাথে যোগ করতে হবে চিনি। এক্ষেত্রে আখের গুড় কিংবা ব্রাউন সুগারও বেশ ভালো কাজ করে।
৪. আরও একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হলো ল্যাকটো ব্যাসিলাস। ১ লিটার মাছের মিশ্রণে ২ টেবিল চামচ মত ল্যাকটো ব্যাসিলাস যোগ করতে হবে।
৫. সম্পূর্ণ মিশ্রণটিকে এমন একটি পাত্রে ঢেলে রাখতে হবে যেখানে পোকামাকড়ের উপদ্রব নেই। আর তারপর পাত্রটিকে পাতলা একটি কাপড় বা জাল দিয়ে ঢাকা দিয়ে দিতে হবে।
৬. সম্পূর্ণ ফারমেন্টেড প্রক্রিয়াটি হতে সময় লাগবে প্রায় দু সপ্তাহ থেকে এক মাসের কাছাকাছি। প্রথমদিকে যদিও একটি তীব্র বাজে গন্ধ সৃষ্টি হয়। তবে এই প্রক্রিয়াসম্পন্ন হয়ে গেলে এর এর গন্ধ খানিকটা ভিনেগার মত হয়ে যায়।
এই ফিস হাইড্রোলাইসেট একদিকে যেমন কৃষকরা নিজেদের কৃষি কাজের জন্য উত্পন্ন করতে পারবেন। গাছের গোড়ায় চারা রোপণের সময় এই তরল মাছের সার দেওয়া হয়ে থাকে। যা উদ্ভিদের পুষ্টিগুণ ধরে রাখতে সাহায্য করে।


