জুন মালিয়া বহিরাগত? মেদিনীপুর সবাইকে আপন করে নেয় ভুললে চলবে না

জুন মালিয়া বহিরাগত? মেদিনীপুর সবাইকে আপন করে নেয় ভুললে চলবে না
সুমন ঘোষ
বহিরাগত। এখন কথাটা বহুল প্রচলিত। কেউ প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে সেই দলের নেতাকে বলছেন বহিরাগত। সে দেশেই। আবার কেউ মুখ্যমন্ত্রীকেও বলছেন বহিরাগত। সে রাজ্যেই। উত্তরও দিয়েছেন তাঁরাই। সে উত্তর হল, তাঁরা কেউ বহিরাগত নন। সকলেই দেশের নাগরিক। ভারতীয়।
এত বড় বিষয় আমার আলোচ্য নয়। আজ, মেদিনীপুর নিয়ে আলোচনা করছি। মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের যুযুধান দুই প্রার্থীর একজনকে বহিরাগত বলা হচ্ছে। তিনি জুন মালিয়া। তৃণমূলের প্রার্থী। তিনি অভিনেত্রী। কলকাতায় থাকেন। তিনি অবশ্য নিজে জানিয়েছেন, তাঁর শেকড় নাকি মেদিনীপুরে। যদি তা না-ই হয়, তাহলেও সমস্যা কোথায়? তিনি রাজ্যের মানুষ। তা নিয়ে তো সমস্যা নেই। তিনি দেশের মানুষ তাতেও সমস্যা নেই। প্রার্থী হবেন বলে তাঁকে জেলাতেই ঘুরে বেড়াতে হবে, জন্মাতে হবে, মোড়ে-চকে-মহল্লায় আড্ডা দিতে হবে এমন কথা কে বলেছে?
এবার আসি একটু পুরনো কথায়। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে যাঁরা ভোট দিতেন, দিয়েছেন, তাঁরা কাদের দিয়েছেন? তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে যখন কথা হচ্ছে তখন তৃণমূল দিয়েই শুরু করা হোক। মেদিনীপুরবাসী কিছুদিন আগেই যে প্রার্থীকে লোকসভায় পাঠিয়েছেন তিনি তো সন্ধ্যা রায়। তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন। এ প্রশ্ন তো ওঠেনি।
শুধু তৃণমূল কেন। একটু পিছিয়ে যান। দীর্ঘদিন ধরে লোকসভায় যাঁকে মেদিনীপুরবাসী পাঠাতেন তিনি ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত। তিনি একাধিকবার জয়ী হয়ে লোকসভায় গিয়েছেন। দেশের স্বৱাষ্ট্রমন্ত্রীও ছিলেন। যদি আরও পিছিয়ে যাওয়া যায়। ১৯৬৯ সাল। ভি কে কৃষ্ণমেনন। তিনিও কিন্তু কেরালা থেকে এসেছিলেন। এই কেন্দ্রেই নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। মানুষ তাঁকেও বিমুখ করেনি।
কেউ কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারেন, সে তো লোকসভা নির্বাচন। হতেই পারে। নির্বাচন তো? তিনি এলাকার মানুষ কি না? তাহলে? মার্চে জুন এসেছে বলেই কী প্রশ্ন? বিষয়টা তো ভোট, রাজনীতি। মেদিনীপুরের মানুষ কিন্তু কাউকেই বহিরাগত বলেনি। রাজ্যের মানুষও বলত না। তাহলে এখন বহিরাগত শব্দটি হঠাৎ এত জনপ্রিয় হল কেন? এরই নাম ভোট রাজনীতি?


