ক্রিসমাসের ছুটিতে যদি একদিনের জন্যে বেরিয়ে আসতে চান, তাহলে ঘুরে আসুন উত্তর ২৪ পরগণা জেলার পানিহাটি শহর থেকে!

ক্রিসমাসের ছুটিতে যদি একদিনের জন্যে বেরিয়ে আসতে চান, তাহলে ঘুরে আসুন উত্তর ২৪ পরগণা জেলার পানিহাটি শহর থেকে!
16 Dec 2022, 03:23 PM

ক্রিসমাসের ছুটিতে যদি একদিনের জন্যে বেরিয়ে আসতে চান, তাহলে ঘুরে আসুন উত্তর ২৪ পরগণা জেলার পানিহাটি শহর থেকে! 

আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: ২০২২ শেষ হতে আর হাতে গোনা মাত্র কয়েকটা দিন বাকি। তার আগে চলতি বছরের শেষ নির্যাস টুকু শুষে নিতে চাইছেন ভ্রমণপ্রেমীরা। সামনেই আছে ক্রিসমাস তারপর আবার নিউ ইয়ার।এমনিতেই এই সময় গুলিতে একদিন অথবা দুদিনের শর্ট ট্রিপ প্ল্যান করে থাকেন অনেকে। একদিনের ক্রিসমাসের ছুটি যদি ঘরে বসে কাটানোর মন না থাকে তাহলে ঘুরে আসতে পারেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পানিহাটি শহর থেকে।

এই শহরটি কলকাতা থেকে খুব বেশি হলে ১৬ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। পরিবার পরিজন, কাছের মানুষ কিংবা বন্ধুদের সাথে এই শহরের আনাচে-কানাচে থাকা ঐতিহাসিক কিছু দর্শনীয় জায়গায় একদিনের জন্য ঘুরতে যাওয়াই যায়। চলুন এই শহরের ঐতিহাসিক হেরিটেজ গুলির তালিকা জেনে নেওয়া যাক।

পানিহাটির দণ্ড মহোত্‍সব তলা: এখানকার ঐতিহাসিক চিঁড়ে দধি উত্‍সব সম্পর্কে অধিকাংশ রাজ্যবাসীই জানেন। প্রতিদিন সকাল ৫টা থেকে একেবারে দুপুর দুটো পর্যন্ত খোলা পাবেন এই জায়গাটি। এছাড়াও এখানে দর্শন করতে পারবেন শ্রী শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর চরণ চিহ্ন।

গোবিন্দকুমার হোম: এই জায়গাটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বহন করে চলেছে। কারণ বেশ কয়েকবার বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন গোবিন্দকুমার হোমে। এখানে বর্তমানে অনাথ বালিকারা তাকে। তবে এই হোমে প্রবেশ করতে গেলে অবশ্যই অনুমতি নিতে হবে আপনাকে।

সোদপুর খাদি প্রতিষ্ঠান: এই প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে পানিহাটি পৌরসভা দ্বারা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত। বছরের কিছু বিশেষ দিনে এই প্রতিষ্ঠান খোলা হয়। ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে আপনাকে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। শোনা যায় এই জায়গাটি নাকি মহাত্মা গান্ধীর দ্বিতীয় আবাসস্থল ছিল। এখানে পৌঁছাতে গেলে সোদপুর স্টেশন থেকে চার পাঁচ মিনিট মতো পায়ে হেঁটে আসতে হবে আপনাকে।

হলদে কালীবাড়ি: পানিহাটির এই মন্দিরটি সত্যিই নিজের সাথে ইতিহাস বহন করে চলেছে। কারণ এই মন্দিরের বয়স ৩৩০ বছর। বলাই বাহুল্য এই মন্দিরের প্রত্যেকটি কোণায় কোণায় ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে।

রাসমঞ্চ ও রাধা গোবিন্দ জীউয়ের মন্দির: আপনি যদি একদিনের জন্য পানিহাটি ঘুরতে আসতে চান তাহলে এই মন্দিরটিকে অবশ্যই নিজের তালিকায় রাখবেন। সাবর্ণ রায় চৌধুরীদের বংশের এই মন্দির। রাস মন্দির থেকে কিছু দূরে এই অবস্থিত চৌধুরী বংশের প্রতিষ্ঠিত দ্বিভুজা মা সিদ্ধেশ্বরী কালী।

রাঘব ভবন: লোকমুখে প্রচলিত কথা অনুযায়ী এই রাঘব ভবনের চৈতন্য মহাপ্রভু প্রায় তিন মাস মত সময় অতিবাহিত করেছিলেন। এই মন্দিরে বিরাজ করে রাধারমন জীউ, রাধামাধব জীউ এবং মাধবী কুঞ্জ।

পানিহাটি ইসকন মন্দির: এখানে প্রত্যেক বছর বেশ বড় করে দই চিঁড়ে উত্‍সব পালন করা হয়। বর্তমানে এটি ইসকন মন্দির হিসেবে পরিচিতি পেলেও পূর্বে এর নাম ছিল দাঁ পরিবারের জগদ্ধাত্রী মন্দির। পানিহাটি ফেরিঘাট থেকে খুব বেশি হলে চার মিনিট মত হাঁটা পথ।

কীভাবে যাবেন?

পানিহাটিতে আসার জন্য শিয়ালদাগামী যে কোন ট্রেন ধরে সোদপুর স্টেশনে নামতে হবে আপনাকে। আর তারপর ফেরিঘাটের অটো করে আসা যাবে পানিহাটিতে। হাওড়া কিংবা হুগলি দিয়ে যদি আসেন তবে আপনাকে নামতে হবে কোন্নগর স্টেশনে। সেখান থেকে অবশ্য ফেরিঘাট পেরোলেই পানিহাটি। আর যদি বি টি রোড ধরে আসেন তবে সোদপুর ট্রাফিক মোড়ের কাছে নেমে টোটো কিংবা রিক্সা করলেই সহজে চলে আসা যাবে পানিহাটি ফেরিঘাটে। উপরে পানিহাটির যতগুলি দর্শনীয় স্থানের নাম উল্লেখ করা হল সবগুলি পানিহাটি ফেরিঘাট থেকে হেঁটে কিংবা টোটো তে ১০-১৫ মিনিটের পথ। এছাড়াও পানিহাটি ঘাট যদি ঘুরে দেখতে চান তবে একটা নৌকা ভাড়া করতেই পারেন। কারণ এই পানিহাটিতে রয়েছে প্রায় ৪০টি ঘাট যা এর ঐতিহ্য বজায় রেখেছে।

খাবার-দাবারের সুব্যবস্থা রয়েছে এই শহরে। তবে রাঘব ভবন এবং পানিহাটি ইসকন মন্দিরের দুপুরে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। তার জন্য অবশ্য বুকিং সেরে নিতে হবে আপনাদের। তাই চলতি বছরের ক্রিসমাস কিংবা নিউ ইয়ারের ছুটিতে যদি একদিনের জন্য কাছাকাছি কোথাও যেতে চান তাহলে ঘুরে আসতে পারেন পানিহাটি।

তথ্য সাহায্য: শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

Mailing List