'আমার যৌনক্ষমতা বেশ আছে, আমি খুবই যৌনসক্ষম’, যদি মেয়ে বলে কিভাবে দেখবে সমাজ? প্রশ্ন তুললেন তসলিমা নাসরিন

'আমার যৌনক্ষমতা বেশ আছে, আমি খুবই যৌনসক্ষম’, যদি মেয়ে বলে কিভাবে দেখবে সমাজ? প্রশ্ন তুললেন তসলিমা নাসরিন
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: যৌনতা নিয়ে প্রথম থেকেই খোলা মেলা তসলিমা নাসরিন। সোজা কথা সোজা ভাবে বলেন। শুধু যৌনতা কেন? ধর্ম থেকে শুরু করে মানবাধিকার, বোরখা পরা – সমস্ত কিছু নিয়েই রাখঢাক নেই। পরিষ্কার কথা পরিষ্কার ভাবে বলেন। তা নিয়ে অবশ্য কম সমালোচনা শুনতে হয়নি।
এবার মুখ খুললেন প্রখ্যাত গায়ক কবীর সুমনকে নিয়ে। সম্প্রতি তিনি নিজের জন্মদিনে জানিয়েছিলেন, তিনি এখনও যৌন সক্ষম। আর তা নিয়ে কবীর সুমনকে সোজাসুজি বিঁধলেন তিনি। প্রশ্ন তুললেন, একজন পুরুষ তো সহজেই একথা বলছেন। কিন্তু যদি কোনও মহিলা বলেন, তখন কী হবে?
নিজেই সেই উত্তরও দিয়েছেন তিনি। প্রখ্যাত সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন সে ব্যাপারে লিখলেন, ‘‘একজন অশীতিপর পুরুষও তুড়ি বাজিয়ে বলতে পারেন, 'আমার যৌনক্ষমতা বেশ আছে, আমি খুবই যৌনসক্ষম।' লোকে এতে অবাক হয় না। আজকাল অবাক হওয়ার কিছু নেই অবশ্য। যৌনক্ষমতা ফুরিয়ে গেলেও ভায়াগ্রা জাতীয় যৌনউত্তেজক দ্রব্য পুরুষের যৌনক্ষমতা যে কোনও বয়সেই বাড়িয়ে দিতে পারে।
একজন অশীতিপর নারী যদি তুড়ি বাজিয়ে বলেন, 'আমার যৌনক্ষমতা বেশ আছে, আমি খুবই যৌনসক্ষম', তাহলে ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজে কী কাণ্ড হবে ভাবলে গা শিউরে ওঠে। যদিও এ খুবই স্বাভাবিক যে, যৌনক্ষমতা কমে গেলেও ভ্যাজাইনাল লুব্রিকেন্ট জাতীয় পদার্থ ব্যবহার করলেই নারীরা চমৎকার যৌনজীবন যাপন করতে পারেন। তারপরও খুব বেশি বয়স বেড়ে যাওয়া নারী যদি কখনও প্রকাশ করেন তিনি যৌনসক্ষম, আত্মীয়স্বজন, পাড়া পড়শি, বন্ধু বান্ধব সবাই তাঁকে ছিঃছিঃ করবে, এমনকী তাঁকে একঘরে করবে।
বেশি-বয়সী পুরুষের যৌনক্ষমতা থাকা গর্বের ব্যাপার, আর বেশি-বয়সী নারীর যৌনক্ষমতা থাকা লজ্জার ব্যাপার। এই বৈষম্য যতদিন টিকে থাকবে ততদিন নারী-স্বাধীনতার নাগাল পাওয়া যাবে না, কখনও ধরে বেঁধে নিয়ে এলে দরজা-জানালা খোলা পাওয়ার অপেক্ষা করবে না, ঘুলঘুলি দেখলেই পালাবে।’’


