শান্তিপুরে ৪০০ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে পূজিত হয়ে আসছেন দেবি কাত্যায়নী, এখানে দেবীর দুটি হাত বড় আটটি হাত ছোট

শান্তিপুরে ৪০০ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে পূজিত হয়ে আসছেন দেবি কাত্যায়নী, এখানে দেবীর দুটি হাত বড় আটটি হাত ছোট
27 Sep 2023, 11:00 AM

শান্তিপুরে ৪০০ বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে পূজিত হয়ে আসছেন দেবি কাত্যায়নী, এখানে দেবীর দুটি হাত বড় আটটি হাত ছোট

 

কুহেলি দেবনাথ, নদিয়া

 

বাঙালির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। আর এই দুর্গা পুজোকে কেন্দ্র করেই বিভিন্ন বনেদী বাড়ি এবং বারোয়ারী মেতে ওঠে পূজা আনন্দে। বারোয়ারিতে বা ক্লাবে থিমের ছোঁয়া, সঙ্গে বিভিন্ন রকম জৌলুষে ভরা। তবে দূর্গা পূজা বলতে বাংলার আপামর বনেদি বাড়ির পুজো গুলি নিষ্ঠা এবং বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। সেরকমই এক বনেদি বাড়ির কথা আজ বলবো, নদিয়ার শান্তিপুর বড় গোস্বামী বাড়ির। আনুমানিক প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো দেবী কাত্যায়নীর পুজো চলে আসছে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে। এখানে দেবী কাত্যায়নী রূপে পুজিত হন। দেবীর মূর্তিতেও রয়েছে বিশেষ বৈশিষ্ট্য। অন্যান্য দুর্গা প্রতিমা যেরকম আমরা দেখি, বা বনেদি বাড়ির দুর্গা প্রতিমা যেরকম দেখি, সেরকম নয়। এখানে দেবী মূর্তির দুটি হাত বড়। অর্থাৎ এই দুটি হাত দিয়েই সংহারের কথা বোঝানো হয়েছে। কিন্তু বাকি আটটি হাত অনেকটাই ছোট।

বড় গোস্বামী বাড়ির সদস্যদের মতে এই পুজো আনুমানিক 400 বছর ধরে নিয়ম নিষ্ঠার সাথে চলে আসছে। এই পুজোর ইতিহাস সম্বন্ধে জানতে গেলে তাঁরা জানান, একদিন তাদের ইষ্ট দেব রাধারমন হঠাৎ মন্দির থেকে অন্তর্ধান হয়ে যান। তারপর বাড়ির গৃহকর্তীরা বাড়ির মন্দিরের উঠোনে বসে দেবি কাত্যায়নির ব্রত পালন করতে থাকেন। এর তিনদিন পর বাড়ির যিনি জ্যেষ্ঠ কর্ত্রী, তাকে দেবী স্বপ্নাদেশে জানান, রাধারমন মূর্তি কোথায় রয়েছে। তারপরেই পাওয়া যায় তাদের ইষ্টদেব রাধারমনের মূর্তি। এরপর থেকেই দেবীর পুজো শুরু হয় নদিয়ার শান্তিপুরের বড় গোস্বামী বাড়িতে। একেবারেই জৌলুষ হীন এই পুজো। এই পুজোতে সাবেকি মূর্তি এবং নিয়মনিষ্ঠাই একমাত্র অবলম্বন।  দেবী মূর্তির আরেকটি বিশেষ দিক লক্ষ্য করা যায়। এখানে দেবীর সন্তান কার্তিক এবং গণেশ বিপরীত স্থান এ অবস্থান করেন। তবে নবপত্রিকা বসানো হয় সঠিক স্থানেই। অর্থাৎ কার্তিকের পাশে বসে নবপত্রিকা। কর্মক্ষেত্র কিংবা অন্যান্য কাজে বাড়ির যে সমস্ত সদস্যরা বাড়ির বাইরে থাকেন, তাঁরা পুজোর ওই চার দিন দেবী কাত্যায়নির পুজোতে মেতে ওঠেন।

আরো জানা যায়, নবমীতে দেশবাসী তথা রাজ্যবাসীর জন্য বিশেষ মঙ্গল কামনা করা হয়। দেবীর কাছে পুজোতে এলাকার মানুষদের খাওয়ানো হয় ভোগ। ভোগ রান্নাতেও রয়েছে আকর্ষণ। যে সমস্ত বিবাহিত মহিলারা দীক্ষিত তারাই দেবী কাত্যায়ণীর ভোগ রান্নার কাজে নিযুক্ত হন। এবং যে সমস্ত মেয়েরা অবিবাহিত তারা দেবীর অন্যান্য পূজার সামগ্রী কাজে নিযুক্ত থাকেন।

Mailing List