কেশপুর থেকেই রাজ্যকে কড়া ওষুধ বিতরণ অভিষেকের

কেশপুর থেকেই রাজ্যকে কড়া ওষুধ বিতরণ অভিষেকের
05 Feb 2023, 12:10 AM

কেশপুর থেকেই রাজ্যকে কড়া ওষুধ বিতরণ অভিষেকের

 

আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: রেষারেষি করে দলের মাথা নত করলে রেয়াত করবে না দল। এমন কড়া ওষুধ দেওয়া হবে যে, তখন আর করার কিছুই থাকবে না। তাই একমাসের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছেড়ে দলের মূলস্রোতে, নতুন তৃণমূলের পথে সবাইকে আসার বার্তা দিলেন অভিষেক।

নতুন তৃণমূল কী? তা বোঝাতেও হাতিয়ার করলেন কেশপুরকেই। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাদের প্রার্থী করা হবে? বক্তব্য দিয়ে নয়, নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের মঞ্চে তুলে তা প্রমাণও করে দিলেন।

মঞ্চে তুললেন কোনও রাজনৈতিক দল না করা শেখ হোসেনুদ্দিনকে। যিনি কেশপুরের উঁচাহারের বাসিন্দা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, ‘‘ইনি কোনও দল করেন না। উনি বলেছেন আবাস যোজনায় বাড়ির জন্য টাকা আমি নেব না। আমার ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। তাঁদের পড়াশোনা করাতে খরচ হয়েছে। আমি বাড়ির টাকা নিয়ে করতে গেলে আরও টাকা লাগবে। তখন আমি মেয়ের বিয়ে দিতে পারবো না। অনেকেই ভাবছেন তৃণমূল করে না তবু কেন ডাকা হল? এই মানুষই আগামি দিনে পঞ্চায়েতের মুখ হবে। করে খাওয়ার দিন শেষ। পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই মুখ হতে চলেছে এই হোসেনুদ্দিন সাহেবের মতো।’’

তারপরই তাঁর মেয়ের বিয়েরও দায়িত্ব নিলেন অভিষেক। অভিষেক বলেন, ‘‘আপনার মেয়ের বিয়ে নিয়ে আপনার চিন্তা রয়েছে। আপনার মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব সম্পূর্ণ আমার। এটাই নতুন তৃণমূল।’’

এরপরই অভিষেক বলেন, ‘‘আমি আর একজনকে ডাকতে চাইছি মঞ্চে। আপনারা ভাবছেন, আজ আবার অভিষেক কী বলবে। কার আবার চাকরি যাবে।’’

বলেই মঞ্জু দলবেরা ও তাঁর স্বামীকে মঞ্চে ডাকেন তিনি। মঞ্জু যিনি কেশপুর গোলাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। তাঁর স্বামী অভিজিৎ। তৃণমূলের বুথ সভাপতি। তাঁরাও আবাস যোজনার টাকা নেননি। শুধু নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্য বলে। অভিষেক তাঁদের দেখিয়ে বলেন, এইভাবেই আগামি দিনে তৃণমূল চলবে।’’ তারপরই অভিষেক মঞ্জু দেবীদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ারও দায়িত্ব নেন। বলেন, ‘‘দল আপনার বাড়ি তৈরি করে দেবে। আমি চিন্তা করবেন না।’’

অনেক বড়বড় নেতা-মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু কাউকে এভাবে জড়িয়ে ধরলেন না। উল্টে এঁদের ধরে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বললেন, আমার ছবি নয়, পারলে এদের ছবি দিন। তৃণমূল এভাবেই স্বচ্ছ মানুষদের নিয়ে চলবে। কেউ যদি মনে করে দাদা ধরে টিকিট পাবে, পাঁচ বছর নিজের স্বার্থে কাজ করবে, মানুষের জন্য করবে না, তাদের কোনও জায়গা নেই। এক অদৃশ্য চোখ ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব দেখছে। সব খবর রয়েছে।’’

যে কেশপুর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার বলে সবাই জানে। প্রায় মারামারির ঘটনা ঘটে। সেখানে দলীয় কোনও নেতাকে আলাদাভাবে ধমক দিয়ে নয়, কাউকে দল থেকে বহিষ্কার করে নয়, একেবারে অন্য পদ্ধতিতে বুঝিয়ে দিলেন। সেকথা নিজেও স্বীকার করেছেন অভিষেক। বলেছেন, অনেকে হয়তো ভেবেছিলেন অভিষেক কী বলবে। কার চাকরি যাবে। কিন্তু সে সবের দিকেই গেলেন না। অথচ, পুরোটাই বুঝিয়ে দিলেন কেশপুরের মানুষকে মঞ্চে তুলেই।

Mailing List