আকাশে চাঁদ না থাকলে কী হতো জানেন?

আকাশে চাঁদ না থাকলে কী হতো জানেন?
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদনঃ আমাদের পৃথিবীর সঙ্গে চাঁদের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই চাঁদ না থাকলে মানুষ হিসেবে আমাদের রোজকার জীবনে অনেক পরিবর্তন আসত।
প্রথম ও সবচেয়ে সুস্পষ্ট পরিবর্তন আসত রাতের বেলায়। চাঁদ না থাকলে রাত হতো অবিশ্বাস্য রকমের অন্ধকার, তার কারণ সূর্য থেকে আলো গ্রহণ করে চাঁদ রাতে পৃথিবীতে আলো দেয়। বিজ্ঞানীদের মতে, রাতের বেলায় চাঁদ না থাকলে মানবসৃষ্ট আলো ছাড়া আমরা আমাদের মুখের সামনে হাত ধরেও তা দেখতে পারতাম না।
তবে চাঁদ না থাকলে শুধু রাতই ঘোর অন্ধকার হয়ে যাবে, তা নয়—আমাদের দিনও বদলে যাবে। পৃথিবী যেমন মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রয়োগ করে, চাঁদও তেমনি পৃথিবীর (Earth) ওপর মহাকর্ষ বল খাটায়। চাঁদের মহাকর্ষ বল প্রয়োগের কারণে পৃথিবীর ঘূর্ণন ধীর হয়ে যায়। চাঁদের এই টানের ফলে পৃথিবীর বিষুবরেখার কাছে একটি স্ফীতি তৈরি হয়, যার ফলে মেরুতে জলের স্তর নিচে নেমে যায়।
আর চাঁদের মহাকর্ষের ফলে পৃথিবীর মহাসাগরগুলোতে জোয়ার-ভাটা (Watter Tide) হয়। প্রবহমান জল ও ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর মধ্যে সামান্য ঘর্ষণ হয়। এই ঘর্ষণ পৃথিবীর ঘূর্ণনকে কিছুটা ধীর করে দেয়। যদি চাঁদ না থাকে, তাহলে জল সারা গ্রহে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারবে—এর ফলে ঘর্ষণের পরিমাণ কমে যেতে পারে।
চাঁদ ছাড়া পৃথিবীতে আমাদের দিন হবে ৬ বা ১২ ঘণ্টার, এখনকার মতো ২৪ ঘণ্টার নয়। দিন ছোট হয়ে গেলে ক্যালেন্ডার বছরে আরও বেশিসংখ্যক দিন থাকত। এক বছরে ৩৬৫ দিনের বদলে ১ হাজারের বেশি দিন থাকত তখন।
এছাড়া চাঁদ না থাকলে ঋতুগুলোতে আমূল বদল আসবে। এই হেলে পড়ার কারণে নানা ঋতুর আগমন-প্রস্থান ও আবহাওয়ায় পরিবর্তন আসে। চাঁদের অনুপস্থিতিতে পৃথিবীর এই হেলে থাকার পরিমাণ কমে অথবা বেড়ে যাবে। পৃথিবীর হেলে থাকার কোণ বেড়ে গেলে সবগুলো ঋতুই হবে তীব্র ও বৈরী। আর হেলে থাকার কোণ কমে গেলে পৃথিবী থেকে এত সব ঋতু উধাওই হয়ে যাবে—অর্থাৎ কোনো ঋতুই থাকবে না।
এই উপগ্রহ আমাদের সাগর-মহাসাগর, আবহাওয়া, এমনকি আমাদের দিনের ব্যাপ্তিকেও প্রভাবিত করে। চাঁদ না থাকলে জোয়ার-ভাটা কমে যাবে, আর রাত হয়ে পড়বে নিশ্ছিদ্র অন্ধকার, ঋতুগুলো বদলে যাবে, এমনকি বদলে যাবে আমাদের দিনের দৈর্ঘ্য।


