গাভীর চাষ করেন? প্রজননের লক্ষ্মণগুলি জানা জরুরি, নাহলে মিলবে না বাচ্চা

গাভীর চাষ করেন? প্রজননের লক্ষ্মণগুলি জানা জরুরি, নাহলে মিলবে না বাচ্চা
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: অনেকেই বাড়িতে গরুর চাষ করেন। বিশেষত, দুধের জন্য গ্রামগঞ্জ থেকে শহর –গাভী পালনের সখ বহু মানুষের। কে না চান যে, বাড়ির দুধ খাবো। আবার অনেকেই ব্যবসার কারণে গাভী চাষ করেন। তাঁদের খামারে থাকে একাধিক গাভী।
কিন্তু কোন সময় বুঝবেন যে গাভীর প্রজনন জরুরি। প্রজনন ছাড়া তো দুধও মিলবে না। কয়েকটি সাধারণ বিষয় থেকেই কিন্তু এটি বোঝা যায়। এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। গরুর প্রজননের সময়টাকে সাধারণ ভাবে গ্রামীন এলাকায় ‘ডাকে আসা’ বা ‘গরম হওয়া’ বলে থাকেন। এই ডাকে আসা বা গরম হওয়ার লক্ষ্মণগুলি কী? তা একটু দেখে নেওয়া যাক।
অন্তরঙ্গতা:
ভালোবাসার চরিত্র অনেকটা এক রকম। মানুষ যেমন অন্তরঙ্গ হয় গাভীও ডাকে আসার সময় হলে অন্তরঙ্গ হওয়ার চেষ্টা করে। তার সামনে যে কোনও গরু থাক না কেন সে তাকে চাঁটবে, তার মুখে মুখ ঘষবে। অন্য গরুর যোনিতেও মুখ ঘষতে দেখা যায়।
দস্যিপনা:
সাধারণ গাভী চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। তাকে কেউ বিরক্ত না করলে লাফালাফি করে না। কিন্তু যখন গরম হয় তখন কিন্তু দস্যিপনা শুরু করে। হঠাৎ করেই লাফাতে থাকে। এক কথায় বড্ড ছটফটে হয়। দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখলেও ওই টুকু জায়গার মধ্যেই হাঁটাচলা করতে থাকে। দড়িতে টান দিতে থাকে।
প্রস্রাব:
এটি বোঝার আর একটি উপায় হল ঘনঘন প্রস্রাব করা। ঘনঘন করায় একসঙ্গে বেশি প্রস্রাব হবে না।
লেজে পরিবর্তন:
গাভীর লেজের চুল বা পশম কিন্তু সুন্দর সাজানো অবস্থায় থাকে। কখনও এলোমেলো থাকে না। কিন্তু গরম হলে লেজের পশমগুলি আগের মতো গোছানো থাকবে না। অগোছালো হয়ে পড়বে।
চরিত্রগত পরিবর্তন:
অন্য গরুর যোনীর ঘ্রান নেওয়ার পাশাপাশি মাথা উচুঁ করে জিহ্বা বের করে দেয়। লেজ উঁচিয়ে রাখে। যোনীর মুখ থেকে লেজটি বারবার সরিয়ে রাখে যোনি মুখ ফুলেও ওঠে। যোনির ভেতরের দিক লালচে হতে থাকে। ধীরে ধীরে তা গাড় গোলাপী রঙের হয়। যোনী পথদিয়ে স্বচ্ছ, আঠালো ডিমের সাদা অংশের মত শ্লেষ্মা জাতীয় পদার্থ বের হয়। এই পদার্থ যোণীমুখ, নিতম্ব, পা, পিঠ এবং তলপেটে লেগে থাকতে দেখা যায়।
রক্তপাত:
যদি নির্দিষ্ট সময়ে প্রজননের জন্য ষাঁড়ের কাছে না নিয়ে যাওয়া হয়, তখন রক্তপাতের ঘটনাও ঘটে। যখন যোনি দিয়ে রক্ত বেরোয় তখন বুঝে নিতে হবে সময়টি পেরিয়ে গিয়েছে। আবার ১৫-২০ দিনের মধ্যে গরম হবে। যদিও রক্তপাত হয় সামান্য। তা কালচে রঙেরও হতে পারে।
উৎপাদন:
গাভী গরম হলে দুধ কম দেবে। সাধারণ সময় যে পরিমাণ দুধ দিত ধীরে ধীরে তার পরিমাণ কমবে। তখনই বুঝতে হবে গরু গরম হচ্ছে।
এটাও মনে রাখা জরুরি কোনও একটি গাভীর ক্ষেত্রে সব লক্ষ্মণ নাও দেখা দিতে পারে। দু’একটি লক্ষণ বোঝা গেলেও কিন্তু গাভী গরম হতে পারে। অভিজ্ঞ প্রাণীপালক হলে তা সহজেই বুঝতে পারবেন। নতুবা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।


