মুখ্যমন্ত্রীর গুলি চালানোর তত্ত্বে এক্সট্রা অক্সিজেন পেল কী সিপিএমের মিনাক্ষীরা?

মুখ্যমন্ত্রীর গুলি চালানোর তত্ত্বে এক্সট্রা অক্সিজেন পেল কী সিপিএমের মিনাক্ষীরা?
30 Mar 2021, 03:20 PM

মুখ্যমন্ত্রীর গুলি চালানোর তত্ত্বে এক্সট্রা অক্সিজেন পেল কী সিপিএমের মিনাক্ষীরা?

 

দ্বিতীয় দফার ভোটের আগে যে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড় তা হল, মুখ্যমন্ত্রীর একটি বক্তব্য। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে চটিপরা পুলিশ গুলি চালিয়েছিল। বাপ ব্যাটার পারমিশন ছাড়া পুলিশ সেখানে সেদিন নন্দীগ্রামে ঢুকতেই পারত না। মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।

 

সেই সময়টা ছিল বামফ্রন্টের শাসন। আর মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সাদা পাঞ্জাবীতে সেদিন রক্তের দাগ লাগিয়েছিলেন সকলেই। কারণ, তখন বলা হয়েছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পুলিশই গুলি চালিয়েছিল। আর এই অভিযোগ জানিয়েছিলেন, তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি আজ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজের বক্তব্যকেই এবার খারিজ করলেন ঠিক নির্বাচনের সময়ে।

কেন এই বিষয়টি উত্থাপন করলেন? কারণ, এখন সেই বাপ ব্যাটা বিজেপিতে। বাপ ব্যাটা বলতে মুখ্যমন্ত্রী শিশির অধিকারী ও শুভেন্দু অধিকারীকে বুঝিয়েছেন। এখন শুভেন্দু অধিকারী বিজেপির প্রার্থী। যিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে লড়াইয়ে ‌নেমেছেন। আর নিজের কেন্দ্রে ভোট প্রচারে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনার প্রসঙ্গ  তোলেন। এবং সেদিন নন্দীগ্রামে পুলিশকে ঢুকতে দেওয়ার পিছনে শিশির অধিকারী-শুভেন্দু অধিকারীদের হাত ছিল বলে জানিয়েছেন।

 

রাজ্যে আট দফা ভোট। সবে প্রথম দফার ভোট শেষ হয়েছে। এমন সময়ে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী কে‌ন একথা বললেন? এতে সিপিএম কতটা অক্সিজেন পেতে পারে? সিপিএমকে অক্সিজেন দেওয়াটাই কী উদ্দেশ্য ছিল এই বক্তব্যের পিছনে? কিন্তু সেক্ষেত্রে তৃণমূলকেও কী অন্য নজরে দেখবেন না সাধারণ মানুষ। এমনই একগুচ্ছ প্রশ্ন উঠে আসছে। প্রশ্নের উত্তর হয়তো পরে মিলবে। যেমন ধীরে ধীরে উঠে এলো নন্দীগ্রামে গুলি চালানোর ঘটনা।

 

তবে এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে, সিপিএম নেতারা মুচকি হাসছেন। কেননা অভিযোগকারিনী নিজেই যে, আসল সত্য ফাঁস করে দিলেন। আইনি দিক দিয়ে আগেই ক্লি‌নচিট মিলেছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। এবার জনগণের কাছেও ক্লিনচিট মিলল স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে। যে বক্তব্যই এবার ভোট প্রচারের শ্লোগান বদলে দিল। মানুষের মনেও প্রশ্ন তুলে দিল। সিপিএমও প্রচারে গিয়ে সকথাই তুলে ধরছে।

ধরা যাক, নন্দীগ্রামের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী সিপিএমের মিনাক্ষী মুখার্জীর কথা। আগে তাঁর প্রচারের বিষয়বস্তু ছিল, কর্মসংস্থান। তার জন্য শিল্পের প্রয়োজন, রাস্তাঘাটের প্রয়োজন। এসব নিয়েই মানুষের কাছে যেতেন। আগের ভোটে মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি, সেই অভিযোগের কথা শোনাতেন। আর এখন নন্দীগ্রামের মানুষকে তিনি বলছেন মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্ত্যব্যের কথা। তারপরেই প্রশ্ন রাখছেন, ২০০৭ সালে তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই সৈনিক ছিলেন শিশির অধিকারী-শুভেন্দু অধিকারীরা। এখন দু’পক্ষ দুই শিবিরে। তাতেই পর্দা ফাঁস। মানুষের মনও কিন্তু উত্তর খুঁজছে।  

 

যদি সেই উত্তর পেয়ে যায়, তাহলে কিন্তু সিপিএম যে অক্সিজেন পাবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনটাই মনে করছেন, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও।

Mailing List