আসানসোলে গোল্ড লোন সংস্থার অফিসে ভরদুপুরে ফিল্মি কায়দায় লুঠ নগদ টাকা, সোনা, তদন্তে সিআইডি

আসানসোলে গোল্ড লোন সংস্থার অফিসে ভরদুপুরে ফিল্মি কায়দায় লুঠ নগদ টাকা, সোনা, তদন্তে সিআইডি
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন : ভরদুপুরে একেবারে ফিল্মি কায়দায় দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটল।
শনিবার দুপুরে আসানসোল দক্ষিণ থানা এলাকার আশ্রম মোড়ের কাছে ওল্ড স্টেশন স্কুলের বিপরীতে একটি গোল্ড লোন প্রদানকারী সংস্থার দফতরে চার সশস্ত্র দুষ্কৃতী লুটপাট চালায়। মারধরের পর হাত-পা বেঁধে রাখা হল নিরাপত্তারক্ষী, আধিকারিক ও কর্মীদের।
ওই সংস্থার দফতরে অতর্কিতে ঢুকে শাখার আধিকারিক সমেত কর্মীদের একটি ঘরে আটকে রাখে দুষ্কৃতীরা। সংস্থার দাবি, লুট হওয়া সোনার পরিমাণ ১২ কেজি। এছাড়া নগদ ১০ লাখ টাকা লুট করে চম্পট দেয় তারা।
এই ঘটনার তদন্তে নেমেছে সিআইডি। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশের পাশাপাশি সেখানে তদন্তে আসেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ এস এস ও এসিপি (সেন্ট্রাল) মানবেন্দ্র দাস। ডিসিপি (সেন্ট্রাল) বলেন, ' তদন্ত শুরু হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ডাকাতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। সীমানা সিল করে তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।'
জানা গিয়েছে, ডাকাতদের ভিতরে ঢোকা, নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার সব দৃশ্যই সংস্থার সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। চার দুষ্কৃতীরই মুখে মাস্ক ছিল। সবাই কথা বলছিল হিন্দিতে। ডাকাতরা কী ভাবে এলাকা ছাড়ে তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, ডাকাতরা সম্ভবত বাইকে এসেছিল। বাইক নিয়েই তারা চম্পট দেয়।
যেখানে এই ঘটনা ঘটে, সেই জায়গাটি থেকে আসানসোল দক্ষিণ থানা থেকে দূরত্ব খুব বেশি নয়। আসানসোলে জিটি রোডের উপর ভাঙা পাঁচিল এলাকায় অফিস ওই গোল্ড লোন প্রদানকারী সংস্থার। দুপুরে অফিসে কাজ করছিলেন ৪ কর্মী। ছিলেন ১ গ্রাহকও। নিরাপত্তারক্ষী অনিল কুমার পাণ্ডে জানিয়েছেন, '২ টো নাগাদ সোনার গয়না বিনিময়ে লোন নেওয়ার নামে করে এক যুবক ভিতরে ঢোকে। গেটে তালা লাগাতে যাচ্ছিলাম। আমার মাথায় বন্দুকে বাঁট দিয়ে মারে। ধাক্কা মেরে ভিতরে ঢুকে পড়ে আরও তিন জন'। তারপর, বন্দুক দেখিয়ে ম্যানেজার-সহ বাকিদের হাত বেঁধে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। অপারেশ শেষ করতে সময় লাগে মিনিট কুড়ি। একটি বস্তায় ১২ কেজি সোনা ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা ভরে চম্পট দেয় ডাকাতরা।
ওই সংস্থার ম্যানেজার সৈকত দাসের দাবি, 'ডাকাতরা ১২ কেজি মতো সোনা এবং নগদ ১০ লক্ষ টাকা লুট করেছে। লুট হওয়া সোনার বর্তমান বাজারমূল্য সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা।'
দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি। ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি।
তবে এই বেসরকারি স্বর্ণঋণ সংস্থায় ডাকাতির ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭-র ২৩ ডিসেম্বর হিরাপুরের বার্নপুর রোডে এই সংস্থার দফতরে হানা দিয়ে প্রায় আট কোটি টাকা মূল্যের সোনা ও নগদ অর্থ লুট করে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বছর দুয়েক আগে একই কায়দায় ডাকাতি হয় বর্ধমান শহরের সংস্থায়। সেখানে গুলিও চলেছিল। জখম হন এক নিরাপত্তারক্ষী। সোনা লুট করার পর সেবারও বাইকে চম্পট দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।



