মুখ্যমন্ত্রীর অনুমান অমূলক নয়, প্রমাণ মিললো সুন্দরবনে, তাতেই চটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মুখ্যমন্ত্রীর অনুমান অমূলক নয়, প্রমাণ মিললো সুন্দরবনে, তাতেই চটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: উপভোক্তারা কী সব সময় নির্দিষ্ট সময়ে সরকারি সহায়তা পান? তা নিয়ে কিন্তু মাঝে মধ্যেই ক্ষোভ দেখা দেয়। তাই মুখ্যমন্ত্রী নিজে হাতে সরকারি প্রকল্পের সহায়তা থেকে নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী যাবতীয় সহায়তা নিজে হাতে দিতে চান। সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জে মঙ্গলবারের সভা থেকেও তাই করতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সভা থেকে তো সকলকে বিতরণ করা সম্ভব নয়। তাই কিছুটা নিজে হাতে দেন, বাকিটা প্রশাসনিক কর্তাদের দিয়ে দিতে বলেন।
মঙ্গলবার সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের মানুষকে দেওয়ার জন্য ১৫ হাজার শীতবস্ত্র কিনেও পাঠিয়েছিলেন। সেকথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘‘‘আমি আসব বলে ১৫ হাজার শীতের কাপড় আনা হয়েছে। ৫ হাজার সোয়েটার, ৫ হাজার কম্বল, ৫ হাজার চাদর কিনে এনেছি। এটা যেন মানুষ ঠিক মতো পায়। আমি নিজেও নজর রাখবো, এগুলো কাকে দিয়েছেন, সবাই ঠিক পেয়েছেন কিনা।’’
তারপরই খোঁজ নেন, সেগুলি কোথায় রেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে জানতে চাইতেই প্রশাসনিক কর্তারা এ ওর দিকে, সে তার দিকে তাকাতে থাকেন। অবশেষে একজন বলেন, সেগুলি রাখা হয়েছে বিডিও অফিসে।
তারপরই মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কোথায় সেগুলো? পরিষ্কার কথা বলুন। কেন বিডিও অফিসে থাকবে। বলুন বিডিওকে এখানে নিয়ে আসতে। আমি থাকবো। আমি একটা জিনিস দিতে চাইলে না পেলে খুব গায়ে জ্বালা ধরে। আমি কত কষ্ট করে এগুলো কিনে এনেছি। আর এসে দেখছি ভোঁ ভাঁ।’’
তারপরই ক্ষিপ্ত মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কেন বিডিও অফিসে রাখা হবে? কাদের দেওয়া হবে। আমি কেবলমাত্র এই এলাকার জন্য এগুলি কিনে পাঠিয়েছি। আমার তো এখানেই ওদের বিতরণ করার কথা ছিল।’’
আনতে গড়িমসি দেখে ক্ষিপ্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি তো এখানে শীতবস্ত্র বিতরণ করতে এসেছি। যদি তা-ই না পাই তাহলে কী করব। যতক্ষণ না সেগুলি আসছে আমি বসে থাকছি।’’ বলেই সভা বন্ধ করে বসে পড়েন তিনি।
একদিকে শীত পড়ে গিয়েছে। সুন্দরবনের মানুষের কথাও কারও অজানা নয়। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বক্তব্যের শুরুতে বলেন, জলে কুমীর, জঙ্গলে বাঘ আর ডাঙায় মানুষ এখানে। তাই তাঁদের জন্য নিয়ে আসা শীতবস্ত্র কেন বিডিও-র গুদামে থাকবে? তাতেই বেজায় চটে যান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী যে ওই শীতবস্ত্র উপযুক্ত উপভোক্তাদের দিতে চান, তা আগেই স্পষ্ট করেছিলেন। তাহলে তার ব্যবস্থা না করে কেন গুদামে? তাই প্রকাশ্যেই সভা ক্ষোভ দেখিয়ে সভা বন্ধ করেন তিনি। আর প্রশাসন কথা না শুনলে যে, অ্যাকশন নেবেন তাও জানান। তারই সঙ্গে সাফ বলেন, কোনও সরকারি অফিসার ভুল করলে তার দায় গিয়ে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর উপর। কেন সেটা তিনি শুনবেন? এক্ষেত্রে কোন কোন প্রশাসনিক ওপর শাস্তির খাড়া নেমে আসে এখন তা নিয়েই চিন্তিত প্রশাসনিক আধিকারিকরা।


