মালদহে বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বিঘার পর বিঘা সবজি ও ফুল চাষ, ক্ষতিপূরণের আশ্বাস কৃষি দপ্তরের

মালদহে বৃষ্টির জেরে ক্ষতিগ্রস্ত বিঘার পর বিঘা সবজি ও ফুল চাষ, ক্ষতিপূরণের আশ্বাস কৃষি দপ্তরের
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন, মালদা: গত সপ্তাহ দুয়েকের টানা অতিবৃষ্টির জেরে ক্ষতির মুখে মালদহের চাষ। বিঘার পর বিঘা সবজি খেত এখনও জলের তলায়৷ জলে ভেসে গিয়েছে গাঁদাফুলের চাষও৷ ফলে পুজার মুখে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে কৃষকদের একাংশ। এই ছবি মালদহের পুরাতন মালদা ব্লকের মুচিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের চর লক্ষীপুরের। মূলত এই গ্রাম কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল এলাকার কৃষকেরা বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে থাকেন। তবে টানা বর্ষণের ফলে সমস্ত সবজি জলের তলায়। কার্যত শারদ উৎসব এর আগে চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষকদের মধ্যে। তবে কৃষি দপ্তর থেকে যদি পাশে না দাঁড়ায় তাহলে আগামী দিনে সমস্যায় পড়বেন এলাকার বহু চাষি।
গ্রামের সবজি চাষি টিটু দাস জানান, প্রায় ১৫ দিন ধরে গ্রামের সমস্ত সবজি আর গাঁদাফুলের জমি জলে ডুবে রয়েছে৷ ফলে এই সমস্ত জমি থেকে ফসল হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷ জল নামলে আমাদের ফের নতুন করে চাষ করতে হবে৷ তবেই সবজি কিংবা ফুল উৎপাদন করা যাবে৷
অন্যদিকে, এলাকার আরেক চাষি অসিতকুমার সরকার জানান, এবার প্রথম দিকে আবহাওয়া বেশ ভালো ছিল৷ তাই আমরা পটলের চাষ বেশি করেছিলাম৷ গাছও বেশ ভালো হয়েছিল৷ পটল উঠতে শুরু করেছিল৷ কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে আমাদের প্রায় ৫০ বিঘা সবজির জমি জলের নীচে চলে গিয়েছে৷ শীতকালীন পালং, মুলো, গাঁদাফুলের পাশাপাশি পটলের খেতও জলের নীচে৷ সামান্য কিছু জমি ফের জেগে উঠেছে বটে, কিন্তু ওই জমিতে আর পটল হবে না৷ মূলত পটলের চাষই সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে৷ ফের নতুন করে চাষ করা ছাড়া উপায় নেই৷ তবে এই ক্ষতির কথা আমরা প্রশাসনকে জানায়নি৷ কারণ, জানিয়ে কোনও লাভ হয় না৷ এবার কেউ দেখতেও আসেনি৷
যদিও এই প্রসঙ্গে পুরাতন মালদা ব্লক সহ কৃষি আধিকারিক সৌমজিৎ মজুমদার জানান, সম্প্রতি গোটা জেলাতেই বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছে৷ পুরাতন মালদা ব্লকেও হয়েছে৷ বৃষ্টির পর কত জমি জলে ডুবে রয়েছে, প্রাথমিক ক্ষতির পরিমাণ কী, তার একটা রিপোর্ট আমরা প্রশাসনকে পাঠিয়েছি৷ প্রশাসন সেটা রাজ্যে পাঠিয়েছে৷ বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় সবজি চাষের ক্ষতি হয়েছে৷ বিশেষত পটল ও বেগুনের চাষ৷ এর পাশাপাশি কলাইয়ের চাষেরও ক্ষতি হয়েছে৷ কিছু জায়গায় ধানখেত জলে ডুবে ছিল৷ অনেক জায়গায় ধানগাছে শিষ চলে এসেছে৷ সেই গাছের ক্ষতি হয়েছে৷ আমরা ইতিমধ্যে উদ্যানপালন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি৷ ওই দফতরও সবজি চাষের ক্ষতি নিয়ে একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছে৷ চাষিদের কাছে আমরা বারবার আবেদন করি, তাঁরা সবাই যেন শষ্যবিমা করিয়ে রাখেন৷ তাতে বিপদ হলেও তাঁরা খানিকটা বাঁচতে পারবেন৷ আমরা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শনে যাচ্ছি৷ ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করে একটা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট উপরমহলে পাঠানো হবে৷


