অশেষ গাঙ্গুলীর কবিতা

অশেষ গাঙ্গুলীর কবিতা
প্রিয় শিক্ষক
হে প্রিয় শিক্ষক
তুমি আমার জ্ঞানের স্বরূপ।
তুমি আমার জীবনের ছত্রছায়া,
যে ছায়ায় জড়িয়ে আছে কত মায়া।
হে প্রিয় শিক্ষক
তুমি আমার জীবন দর্পণ,
যে দর্পণ দেখিয়েছে আমাকে
জীবনের আসল স্বরূপ।
তুমি যে আমার জীবনের বটবৃক্ষ
যে বৃক্ষের ছায়ায় পেয়েছি অসীম শান্তি।
যে শান্তি আমাকে ভুলিয়েছে
জীবনের শত দুঃখ-যন্ত্রণা।
তুমি যে আমাকে বুঝিয়েছ
বাঁচার আসল মানে।
হে প্রিয় শিক্ষক
তুমি যে আমার জ্ঞানহীন মনে
দিয়েছে তোমার মহৎ জ্ঞান।
যে জ্ঞান অন্ধকার থেকে
আমাকে এনেছে আলোর পথে।
তুমি যে আমার অগ্রগতির পথে
দিয়েছ আমাকে অনুপ্রেরণা।
যে অনুপ্রেরণা মনে দিয়েছে সাহস
জীবনের প্রতিটি সময়ে মনে দিয়েছে শক্তি।
যে শক্তি মনের ভয় কে দিয়েছে সরিয়ে।
এনেছে আমাকে সত্যের পথে।
হে প্রিয় শিক্ষক
তোমার মহৎ দান ভুলতে পারবো না-গো কোনো দিন।
হে প্রিয় শিক্ষক
তোমাকে জানাই শতকোটি প্রনাম।
.........
হতাম যদি
আমি যদি হোতাম আমার গ্রামের চাষি,
সারাদিন জমি চাষ করে মাখতাম গায়ে ধুলো-মাটি।
আমি যদি হোতাম আমার গ্রামের নদী,
সারাদিন কাজ শেষে আমার জলে
গা ধুতো সবাই।
আমি যদি হোতাম বটবৃক্ষ,
আমার ছায়ায় জিরিয়ে নিয়ে শান্তি পেত কতজন।
আমি যদি হোতাম ভোরের পাখি,
আমার কুজনে জেগে উঠত সবাই।
আমি যদি হোতাম বৃষ্টি,
গ্রীষ্মের তপ্ত ধরণীর বুকে ঝরে পড়তাম
একটি বিন্দু জল হয়ে না হয়।
আমি যদি হতাম এক ফালি হলুদ রোদ,
শীতের সকালে প্রকৃতির মাঝে দিতাম খানিক উষ্ণতা।
আমি যদি হতাম রঙিন প্রজাপতি,
আমার এই রঙ ছড়িয়ে দিতাম প্রকৃতির মাঝে।
কিন্তু আমি তো এই সব কিছুই হতে পারিনি!
তাই মানুষ হয়ে সারাটি জীবন
আমার গ্রামকে,
গ্রামের প্রকৃতিকে ভালোবেসে যেতে চাই।
..........
মধ্যবিত্ত
আমরা মধবিত্ত
সমাজের সকল নিয়ম আর শাসনে শাসিত শ্রেণি।
যাদের প্রতিদিন - প্রতিনিয়ত কিছু পাওয়ার আশায়
অনেক কিছু হারিয়ে ফেলতে হয়।
প্রতিদিন ভোর হয় কিছু পাওয়ার আশায়
রাত হয় অসংখ্য না পাওয়ার যন্ত্রণায়।
যাদের সবাই কে সম্মান দিতে হয়
কিন্তু সমাজের থেকে সম্মান পাই না।
মধ্যবিত্ত জীবনে হাজারও স্বপ্ন আছে
বাস্তবে যার নেই কোন পরিণতি।
যাদের জীবনে হাজারও যন্ত্রণা আছে।
কিন্তু যন্ত্রণা সময় পাশে দাড়ানোর মতো মানুষ নেই।
মধ্যবিত্ত জীবনে সমাজের স্বার্থান্বেসী মানুষের
প্রতি হাজারও রাগ থাকলেও প্রকাশের উপায় নেই।
তাদের জীবনে চলার পথে অসংখ্য চিন্তা থাকলেও
কিন্তু চিন্তার কোন উপসম নেই কোন।
তবুও তারা বেঁচে থাকে
হাজারও স্বপ্ন পূরণের আশায়।
............
বৃক্ষের যন্ত্রণা
বৃক্ষের কাছে নিয়েছি তো অনেক
দিয়েছি শুধুই তাকে যন্ত্রণা
গ্রীষ্মে তার ছায়ায় নিয়েছি আশ্রয়
তার ঠান্ডা হাওয়াতে শরীর হয়েছে হীম
বৃক্ষ থেকে নিয়েছি ফুল - ফল
আর কত কী
কিন্তু কিছু কূমনভাবী মানুষেরা
তার দেহে করেছে আঘাত
কুঠার আঘাতে তার দেহ কে
করেছ ক্ষত - বিক্ষত
ভুলেছে তারা এক সময়
তার কাছে পেয়েছে কত কিছু
স্বার্থের লোভে তারা
জঙ্গল কে করেছে মরুভূমি
কিন্তু যেদিন বুঝবে সেদিন দেখবে
বাকি নেই আর কিছু
তাই তাদের আমি সবশেষে বলছি
বৃক্ষ কে মেরো না করো না আঘাত
বৃক্ষ করো বপন, সৃজন
তবেই তো প্রকৃতি হবে আর
সুন্দর ও নির্মল
.........
অমূল্য সময়
সময়ের থেকে অমূল্য
নেই কিছু এই জীবনে।
সময়ের পরিবর্তনে বদলে যায় অনেক কিছু।
সময় যে মানুষ কে নিয়ে যায় উন্নতির পথে।
সময়ের পরিবর্তনে মানুষ ডুবে যায়
অবনতির বালুচরে।
সময় না হলে যেমন
হয় না জন্ম,
সময়ের অবসানে হয় যে মৃত্যু ।
প্রতিটি সময় যেন
দেয় আমাদের শিক্ষা।
সময়ই যে দেয়
আমাদের অভিজ্ঞতার দীক্ষা।
সঠিক সময়ের দাও তুমি মূল্য।
না হলে
সময় শেষ হলে
তোমার জীবন হবে অবসান।



