অনুব্রতর অন্ডকোষ, দেউলিয়াপনার দিকেই কী এগোচ্ছে না

অনুব্রতর অন্ডকোষ, দেউলিয়াপনার দিকেই কী এগোচ্ছে না
18 Apr 2022, 12:26 AM

অনুব্রতর অন্ডকোষ, দেউলিয়াপনার দিকেই কী এগোচ্ছে না

 

বিশেষ প্রতিবেদন:  অনুব্রত মন্ডলকে নিয়ে কম লেখালেখি হয়নি। এটা সবার জানা।

অক্ষর বা শব্দ খরচের হিসেবে তিনি কোন কোন বিখ্যাত দেশনেতাদের ছাড়িয়ে গিয়েছেন সে হিসেব আমার জানা নেই। তার কারণ, তিনিই। তিনি সময় সময় নিদান দেন। এবং সেটাই রাজ্যে জনপ্রিয় হয়। কোনও সময় গুড় বাতাসা তো কোনও সময় চড়াম চড়াম। এবং সেটা করেন কম অক্সিজেনে।

আমি তাঁর অসুস্থতা সম্বন্ধে খুব বেশি কিছু জানি না। কিন্তু এটুকু বুঝেছিলাম, তিনি সিবিআই এর তলবে হাজিরা হওয়ার দিনেই এসএসকেএম হাসপাতালে পৌঁছন। এটা ভয়ে হতে পারে। সিবিআই জেরা এড়াতে হতে পারে। এ নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন।

কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর অসুস্থতা নিয়ে নানা খবর প্রকাশ্যে আসছে। সেটা হতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন বিশেষত, অন্ডকোষ নিয়ে। যা নিয়ে দায়িত্ববান খবরের কাগজগুলোও ফলাও করে লিখছে। লিখতেই পারে। কিন্তু সেটা কী সত্যিই কারও অসুস্থ হওয়ার খবর? নাকি এর মধ্য দিয়ে কাউকে হ্যাটা করা হচ্ছে। অন্ডকোষ নিয়ে এভাবে বলা, অসুস্থতা নিয়ে এভাবে বলা কতটা সঙ্গত?

এ প্রশ্নের উত্তর, যাঁরা লিখছেন, যাঁরা দায়িত্ববান, তাঁরাই বলতে পারবেন।

অন্ডকোষ অনেকের লক্ষ্য হতেই পারে। ছোট্টবেলায় শুনতাম, তোর কত বড় রে?

আবার আক্রোশে কেউ বলতো, দেখবি ওটা ফাটিয়ে দেব। তখন বুঝবি কত ধানে কত চাল।

আসলে এমন কিছু নয় তো? অনেকে আবার বয়স বাড়লে ছোটদের মতো আচরণ করে। যেমনটা বলা হয়, বাবা-মা ছেলে মেয়ে হয়ে যায়, যখন বাবা-মায়ের বয়স বাড়ে। ছেলে মেয়েরা বড় হয়।

রাজনীতির অঙ্গনে রাজনীতিকরা ঘুরে বেড়ান। খবরের অঙ্গনে সাংবাদিকরা। কত শব্দই কলমের ডগায় ফুটে উঠেছে প্রখ্যাত ব্যক্তিদের কলমে। আজ সে কলমেই অন্ডকোষ হেডিং হয়। তীর্যক ভঙ্গিতে। আরও কত শব্দই তো আসছে। স্মার্ট হওয়ার ঢঙে। তাহলে সংস্কৃতি? সেই চর্চা ছাড়িয়ে ...কেন? সংস্কৃতি চর্চাকেও দেখা যায় বিছানায় শেষ করা হয়। আসলে খেলা সত্যি কী ঘুরছে?

সত্যিই কী দেশে বা রাজ্যে আর কোনও বিষয় নেই? সব অপরাধমুক্তি ঘটে গিয়েছে। সব উন্নয়ন সম্পন্ন। অলস সময়ে অনুব্রতর অন্ডকোষই লক্ষ্য!

এ নিয়ে তো বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা ব্যাঙ্গ করেছেন। আরও অনেকেই কত কথা বলে। সব কথা কী কথকতা হয়।

জানি না।

শুধু এটুকু বলতে পারি, অনুব্রতর অন্ডকোষ লক্ষ্য ভেদ যেন সাংবাদিক বা সম্পাদকদের জরুরি না হয়ে ওঠে। এখনও এ পোড়া দেশে বিষয়ের অভাব দেখা দেয়নি। রাজনীতির মধ্যে, রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে যে ক্ষয় নিয়ে আলোচনা হয় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সেখা‌নে মানুষের দুঃখের কথা ছেড়ে একজনের অন্ডকোষ আলোচনার বিষয় কেন হয়ে উঠছে, এ বিষয়ও হয়তো একদিন গবেষণার অঙ্গ হতে পারে।

সেদিন হয়তো নিম্নগামীতার পরিচয় দেওয়ার জন্য ভাবার অবকাশ থাকবে না। ধরে নিতে হবে দেউলিয়াপনারও একটা সীমা থাকে।

আসলে ওখানেই রবীন্দ্রনাথ। ওখানেই শান্তিনিকেতন। অনুব্রতর হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, অক্সিজেন কম,- অনেক তো হল। রবীন্দ্রনাথ, শান্তিনিকেতনও ধুয়ে গেল!

সেই কী পুরনো ফর্মুলা-

ছলে বলে বা কৌশলে পাঠক ধরে রাখো। প্রয়োজনে রসালো খবরেও আপত্তি নেই। সেটাই যেন দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

Mailing List