কলকাতায় আসছেন অমিত শাহ, তড়িঘড়ি পাশাপাশি বসলেন শুভেন্দু-দিলীপ

কলকাতায় আসছেন অমিত শাহ, তড়িঘড়ি পাশাপাশি বসলেন শুভেন্দু-দিলীপ
16 Dec 2022, 03:30 PM

কলকাতায় আসছেন অমিত শাহ, তড়িঘড়ি পাশাপাশি বসলেন শুভেন্দু-দিলীপ

 

আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: শান্তির সাদা পতাকা পতপত করে উড়তে দেখা যাচ্ছে। নেপথ্যে অমিত শাহ! একটু খোলসা করে বলা যাক। ঘটনাটা কি? হুগলি জেলায় গেরুয়া শিবিরের একটি দলীয় কর্মসূচি ছিল। সেই কর্মসূচিতে এদিন যে ছবি দেখা গেল সেটা হঠাৎ রাজ্যবাসী দেখতে গেলে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারবেন না। দেখা যাচ্ছে, হুগলির ওই দলীয় সভায় পাশাপাশি বসে রয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাহলে কি সমস্ত কিছু শোধবোধ হয়ে গেল? লড়াই শেষ? এই যে এতদিন ধরে পাওয়ার স্ট্রাগলের লড়াই চলছে, একে অপরকে খোঁচা দিচ্ছেন, কে বড় কে ছোট, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে ব্যস্ত ছিলেন, সেগুলো কি সমস্ত কিছুই মিটে গিয়েছে? 

এককথায় এর উত্তর খুঁজে পাওয়া কঠিন। তবে বাস্তবে এটুকু দেখা যাচ্ছে যখন কলকাতায় পা রাখতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, ঠিক তার আগেই কড়া বার্তা এসেছে দিল্লির তরফে। সেই বার্তাতেই বঙ্গ বিজেপিকে যে এক জায়গায় ছাতার তলায় এসে দাঁড়াতে হবে সেটা একরকম বাধ্যতামূলক। দলীয় নির্দেশ অমান্য করা কোনো নেতার পক্ষেই সম্ভব নয়।

 সূত্রের খবর অনুযায়ী, এদিন রাতেই কলকাতায় পৌঁছে যেতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এবার কলকাতায় আগমনের উদ্দেশ্য হল, শনিবার নবান্নের সভাঘরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইস্টার্ন জোনাল কাউন্সিলের বৈঠক। মূলত তিনি সরকারি কর্মসূচিতেই আসছেন। এই বৈঠকে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে নিরাপত্তা, সমন্বয় এবং সমস্যার সমাধানের কৌশলের বিষয়ে আলোচনা হবে। এর আগে ৫ নভেম্বর নবান্ন সভাঘরে এই পূর্বাঞ্চল পরিষদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে অমিত শাহ যোগ দিতে পারবেন না জানালে সেটা পিছিয়ে যায়। আর এখানেই শুরু হয়েছে জল্পনা। কলকাতায় শাহ-পা রাখবেন, এই বার্তা পৌঁছতেই বঙ্গ বিজেপির নেতারা একপ্রকার বাধ্য হয়েই সমস্ত দ্বন্দ্বকে পিছনে ফেলে নিজেদের এক বন্ধনীর মধ্যে দেখানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। জানা গিয়েছে, অমিত শাহ শুক্রবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে ৬ নম্বর মুরলিধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির দপ্তরে বৈঠক করতে পারেন। এই বৈঠকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ সহ একাধিক নেতৃত্বের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

 বেশ কিছুদিন ধরেই একে অপরকে কটাক্ষ, খোঁচা, তির্যক উক্তি শানাচ্ছেন। কখনো শুভেন্দু বলেছেন মর্নিং ওয়াকে মিডিয়া বাইট দিই না।  তার পাল্টা আবার দিলীপ কখনো বলেছেন সকালে উঠতে দম লাগে। শুভেন্দু তারিখের রাজনীতির কথা বলেছেন, দিলীপ বলেছেন তারিখ নিয়ে রাজনীতি করি না। এই ধরনের একের পর এক মতবিরোধকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়েছে। কিন্তু হুগলির সভায় যে ছবি দেখা গেল, দিলীপ- শুভেন্দুর পাশাপাশি বসে থাকা, শুধু তাই নয়, সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, বিরোধ কি? চশমা খুলুন। বিজেপিকে বিজেপির চশমায় দেখুন। তবে এটা ঠিক, রাজ্যবাসীকে কোনো চশমায় দেখার কোনো প্রয়োজন নেই।  সাদা চোখে যা দেখা যাচ্ছে তা দেখার জন্য কোনো চশমা লাগে না। রাজনৈতিক মহলের মতে, কোনো রাজনৈতিক দলের ভিতরে যখন পাওয়ার স্ট্রাগলের লড়াই চলে, তখন প্রত্যেকটি নেতার মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। তার মধ্যে রাজনৈতিক কারণ থাকে না, শুধুমাত্র নিজে সেই দলের অন্দরে কতখানি ক্ষমতা ভোগ দখল করতে পারবে সেই বিষয়টি জড়িত। তবে অমিত কলকাতায় পা রাখার খবরে যে মিল দেখা গেল আগামী দিনে আদৌ এই পরিস্থিতি বজায় থাকবে কিনা তা জানার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে।

Mailing List