সরকারি নয়ানজুলি ভরাট করে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রির অভিযোগ মালদায়, চলছে বাড়ি নির্মাণও

সরকারি নয়ানজুলি ভরাট করে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রির অভিযোগ মালদায়, চলছে বাড়ি নির্মাণও
নারায়ণ সরকার, মালদা
এবারে সরকারি জমিতে মাটি ভরাট করে বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠল সরাসরি শাসক গোষ্ঠীর কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে। এমনকি এই বেআইনি কাজের পিছনে এলাকারই ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রভাবশালী নেতার মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি আরো অভিযোগ, সরকারি নয়নজুলি এই ভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং তাতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে শুধু তা-ই নয়, তার নাকি কাগজও হয়ে যাচ্ছে! ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীপুর গ্রামে। অবৈধভাবে মাটি ভরাটের ঘটনায় এলাকারই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে।
এই ঘটনায় হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক বিডিও, আইসি সহ একাধিক প্রশাসনিক আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে বলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডিপুর এলাকায় তুলসিহাটা যাওয়ার রাজ্য সড়কের ধারে শ্রী চন্দ্রপুর এলাকায় একটি সরকারি জলাশয় রয়েছে। এই জলাশয়ের কিছু অংশ পাট্টা হিসাবে এলাকারই বাসিন্দা মহাদেব দাসের নামে আছে। মহাদেব দাসের পরিবার এলাকার তৃণমূল কর্মী বলে পরিচিত। তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মহাদেব দাসের পাট্টা জমি আনোয়ার আলী বলে এক তৃণমূল কর্মী কে বিক্রি করে দিয়েছে। আনোয়ার আলী এলাকারই এক প্রভাবশালী তৃণমূলের ব্লক নেতার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। জলাশয় মাটি দিয়ে ভরাট করে তার উপরে অবৈধ নির্মাণ শুরু করেছিল। আনোয়ার আলীর এই কাজে বাধা দেন এলাকারই তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। আর বাধা দিতে গিয়ে এলাকারই তৃণমূলের দুই কর্মী সমর্থক গোষ্ঠী প্রকাশ্য সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকা জুড়ে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার অভিযোগ জানানো হয়েছে বিডিও, আইসি সহ একাধিক আধিকারিকদের কাছে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবৈধ মাটি ভরাটের কাজও বন্ধ করেছে। বন্ধ করা হয়েছে অবৈধ নির্মাণ।
স্থানীয় তৃণমূল সমর্থক লগেন দাস, সাবি দাস, মশিউর রহমানরা জানিয়েছেন, ‘‘এভাবে যদি নয়ানজুলি বন্ধ হতে থাকে তাহলে শুধু আমাদের গ্রাম নয়, আশপাশের বহু গ্রাম বিপদে পড়বে। কারণ, এই একটি জায়গাতেই বৃষ্টির জল এসে পড়ে। তাই অবিলম্বে তা বন্ধ না হলে বিপদ। প্রতিবাদ করেও আমরা সুফল পাচ্ছি না।
গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বিউটি খাতুনের স্বামী আব্দুল কাদের বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি কিছুদিন হল জানতে পেরেছি। অবশ্যই এই ধরণের কাজ করতে দেওয়া যাবে না। তাহলে ২০-২৫টি গ্রামের মানুষে ভবিষ্যতে বিপদে পড়তে হবে। কারণ, সব গ্রামের নিকাশীর নালা এটিই।’’ বিজেপি অবশ্য বিষয়টিকে হাতিয়ার করতে ছাড়েনি। জেলা বিজেপি সম্পাদক কিষাণ কেডিয়া বলেন, ‘‘সবই তো হচ্ছে শাসক দলের নেতাদের মদতে। কে বন্ধ করবে। নাহলে প্রকাশ্যে এভাবে বাড়ি বানাতে পারে।’’


