ডিউটি করার লাঠি দিয়েই স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ পুলিশ-কর্মী স্বামীর বিরুদ্ধে, মালদার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভে ফুঁসছেন সকলে

ডিউটি করার লাঠি দিয়েই স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ পুলিশ-কর্মী স্বামীর বিরুদ্ধে, মালদার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভে ফুঁসছেন সকলে

নারায়ণ সরকার, মালদা

রক্ষকই যেন ভক্ষক। লাঠি দিয়ে পিটিয়ে এবং শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগ উঠলো পুলিশ কর্মী স্বামীর বিরুদ্ধে। এমনকি স্ত্রীকে খুন করার পর বাড়ি থেকে সামান্য দূরে একটি বাগানের মধ্যে গাছে ওড়না দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। গণপিটুনির হাত থেকে রক্ষা পেতে অবশেষে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযুক্ত নিজেই আত্মসমর্পণ করেন। শুক্রবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের পুরাতন মালদা ব্লকের মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের খনিবাথান এলাকায়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম মাম্পি মন্ডল (২৫)। তাঁর বাবার বাড়ি পুরাতন মালদা ব্লকের পোপরা এলাকায়। গত সাত বছর আগে মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের খনিবাথান এলাকার বাসিন্দা পেশায় পুলিশ কর্মী জয়ন্ত মন্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় মাম্পির। তাদের দুই নাবালক পুত্র সন্তান রয়েছে।

ঘটনার খবর পেয়ে ওই এলাকায় তদন্তে পৌঁছায় পুরাতন মালদা থানার পুলিশ। মৃত গৃহবধূর দেহ উদ্ধারের পর মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী জয়ন্ত মন্ডল এবং তার দিদা ফুলমণি মন্ডলের বিরুদ্ধে মৃতের পরিবার সংশ্লিষ্ট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মৃত গৃহবধূর এক কাকা রামু মন্ডল পুলিশকে অভিযোগে জানিয়েছেন, যে লাঠি নিয়ে জামাই জয়ন্ত মন্ডল ডিউটি করত। সেই লাঠি দিয়েই বাড়িতে এসে মেয়েটাকে প্রতিনিয়ত মারধর করতো। অত্যাচার চালাত। জামাইয়ের সঙ্গে অন্য এক মহিলার পরকীয়ার সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিল ভাইজি। এনিয়ে প্রতিবাদ করেছিল। আর তার জেরে মাম্পি মন্ডলকে পিটিয়ে খুন করার পর বাড়ি থেকে সামান্য দূরে আম গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে মৃতের পরিবারের আরো অভিযোগ, মাম্পি মন্ডলের যখন মৃতদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ তখন আম গাছের সঙ্গে গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় ছিল। মৃতদেহটি হাঁটুভাজ করা অবস্থায় জঙ্গলের মধ্যেই পড়েছিল। পুরো ঘটনাটি নিয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

    এবিষয়ে পুলিশ জানিয়েছেন, মৃত গৃহবধুর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই জয়ন্ত মন্ডল থানায় আত্মসমর্পণ করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই বলা যাবে।