পঞ্চায়েত ভোটে কারা তৃণমূলের প্রার্থী হবেন আর কারা নয়, স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক

পঞ্চায়েত ভোটে কারা তৃণমূলের প্রার্থী হবেন আর কারা নয়, স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন অভিষেক
আনফোল্ড বাংলা বিশেষ প্রতিবেদন: পঞ্চায়েত নির্বাচন এলো বলে। বর্ষা পেরোলেই বেজে যাবে নির্বাচনের ঘন্টা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে কোনও সময় নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যেতে পারে। তাই দ্রুত উন্নয়নের কাজও শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কারণ, নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলে আর নতুন করে কাজ করা যাবে না।
সে তো গেল একটি দিক। কিন্তু এবার ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন কারা তৃণমূলের প্রার্থী হতে পারবেন? এবার সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুঝিয়ে দিলেন, তৈল মর্দন বা টাকা থাকলেই যদি কেউ মনে করে তৃণমূলের প্রার্থী হতে পারবেন, তাহলে ভুল ভাবছেন। প্রার্থী হতে গেলে একমাত্র যোগ্যতা কী? সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন। তা হল মানুষের কাছ থেকে সার্টিফিকেট লাগবে।
মঙ্গলবার ২১ জুলাই এর সমর্থনে একটি সভা ছিল জলপাইগুড়ির ধূপগুড়িতে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি পঞ্চায়েতের প্রার্থী নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা রেখেছেন। কী ব্যাখ্যা করেছেন এবার তা দেখে নেওয়া যাক।
১। আগেও একবার একথা বলেছিলেন। এবার সেকথা মনে করিয়ে অভিষেক বলেন, ‘হয় তৃণমূল করুন, নাহলে ঠিকাদারি করুন। দুটো একসঙ্গে হবে না। আমরা সারা বাংলায় এটা বাস্তবায়িত করে দেখাব।’ অর্থাৎ বুঝিয়ে দিলেন ঠিকাদারদের পঞ্চায়েতের টিকিট মিলবে না। সেটা স্পষ্ট করতে তিনি আরও জানান, ঠিকাদারের কথায় পঞ্চায়েত চলবে না।
২।অভিষেক বলেন, ‘ব্যাঙ্ক ব্যালান্স থাকলে নির্বাচনে টিকিট পাবেন না, মানুষের কাছ থেকে সার্টিফিকেট পেলে, তবেই টিকিট পাবেন।’ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা থাকলে, তবেই যে প্রার্থী করা হবে, সেটাই আবারও সাফ জানালেন। স্পষ্টভাষায় বুঝিয়েছেন অভিষেক।
৩। অভিষেক বললেন, ‘কোনও দাদার পা ধরে, কোনও দিদির পা ধরে, কোনও লোকাল নেতা-নেত্রীর পা ধরেও কোনও লাভ নেই। নেত্রী একজনই, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আদর্শে দল করতে হবে, নাহলে অন্য দলে চলে যাওয়ার জন্য রাস্তা খোলা আছে।’ অর্থাৎ কেউ যদি মনে করে থাকেন বছরভর মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার দরকার নেই, শুধু হাতে গোনা দু’একজন প্রভাবশালীর নেতা-নেত্রীকে তৈলমর্দন করলেই মিলে যাবে পঞ্চায়েতের টিকিট, সেটা যে দিবাস্বপ্ন তাও পরিষ্কার করে দিলেন।
৪। অভিষেক বলেন, ‘মানুষ ভোট দিতে চায়। কিছু লোকের জন্য ভোট দেয় না। আমরা তাদের চিহ্নিত করব। আমি কথা দিচ্ছি, তাদের মধ্যে কাউকে এবার টিকিট দেওয়া হবে না।মাথা নিচু করে মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে চলুন। মানুষের সঙ্গে কখনও খারাপ ব্যবহার করবেন না।’ অর্থাৎ এটাও বুঝিয়ে দিলেন যে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, ঔদ্ধত্য রয়েছে, এমন ব্যক্তিদেরও টিকিট মিলবে না।
যে কোনও নির্বাচনেই টিকিট একটি বড় ব্যাপার। বিশেষত, শাসক দল হলে সবাই চেষ্টা করেন নির্বাচনে দাঁড়ানোর। আর নির্বাচনে দাঁড়ানোর সূযোগ না পেলেই শুরু হয় অশান্তি। বিক্ষোভ, ভাঙচুর, পথ অবরোধও হয়েছে। এবার নির্বাচন ঘোষণার অনেক আগে থেকেই প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে দিক নির্দেশ করে দিলেন অভিষেক।


