কলকাতার কাছেপিঠে ১১টি পিকনিক ডেস্টিনেশন

কলকাতার কাছেপিঠে ১১টি পিকনিক ডেস্টিনেশন
আনফোল্ড বাংলা প্রতিবেদন: শীতকাল পড়তে না পড়তেই পিকনিকের ধুম। ঠাণ্ডার মরশুম আসা মানেই জমিয়ে খাওয়াদাওয়া, বনভোজন, পার্টি, বেড়ানো, হৈ-হুল্লোড়ের দিন।
যে যা-ই বলুক, পুজোর পর পিকনিকেই কিন্তু একসঙ্গে পরিবার, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আনন্দ উপভোগ করা যায়। সব মিলিয়ে পিকনিক মানে একটা নস্টালজিয়া। তাই কলকাতার কাছে-পিঠে কয়েকটি পিকনিক স্পটের হদিশ আপনাদের জন্য।
ডায়মন্ড হারবার
কলকাতার বাসিন্দা হয়ে ডায়মন্ড হারবারের নাম শোনেননি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। গঙ্গার ধারে বসে পিকনিক করার সবচেয়ে পুরনো জায়গা এটি। এখানে শুধু নদীই নেই, দেখতে পাবেন পুরনো কেল্লাও। নদী পাড়ের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করতে করতে খানা-পিনা, খেলাধুলো এবং গল্প করে কেটে যাবে সারাটা দিন। ভাগ্য সহায় হলে দেখা মিলতেই পারে শুশুকের। চাইলে আপনারা নৌকায় চেপে গঙ্গার বুকে বেড়াতেও পারেন।
রায়চক
কলকাতা থেকে ৫৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রায়চকের নাম কারোর অজানা বলে মনে হয় না। গঙ্গাপাড়ের পিকনিক স্পটগুলোর মধ্যে এটা একটি। পিকনিকের পাশাপাশি এখানে দেখে আসতে পারবেন রায়চক দুর্গও। রয়েছে আরও দর্শনীয় স্থান। অর্থাৎ সারাদিন ঘোরাঘুরি আর নদীর ধারে জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া করার মতো দারুণ একটা জায়গা।
ফলতা
ফলতা হল ডায়মন্ড হারবার, হুগলি এবং রূপনারায়ণের মিলন স্থল। কলকাতা থেকে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত এই জায়গাটি। গ্রাম্য পরিবেশ, নদী, সবুজ গাছ-পালায় সময় কাটানোর একটু আদর্শ স্থান ফলতা।
বাওয়ালির রাজবাড়ি
বাওয়ালির রাজবাড়ির নাম কম-বেশি অনেকেই শুনেছেন। এবারের শীতের পিকনিকটা সেখানেই সারলে কেমন হয়? দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নোদাখালিতে অবস্থিত এই রাজবাড়ি। কলকাতা থেকে দূরত্ব মাত্র ৩৫ কিলোমিটার। এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্যাকেজ। হ্যাঁ, রাজবাড়ির ভিতরেই সারতে পারবেন পিকনিক। এমনকি চাইলে ১-২ রাত্রি থাকতেও পারবেন। এক্ষেত্রে রাজবাড়ির অফিসে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রাসাদে থাকা-খাওয়ার পাশাপাশি একটা নিরিবিলি পরিবেশে সময় কাটানোর এটা আদর্শ জায়গা।
পিয়ালি দ্বীপ
পিয়ালি নদীর ধারে অবস্থিত বলে দ্বীপটির নামও পিয়ালি। এই দ্বীপের কাছেই অবস্থিত সুন্দরবন টাইগার ক্যাম্প। ভাগ্য থাকলে সেখানে দেখা মিলতেই পারে বাঘবাবাজীর। জঙ্গল ও জলরাশি ঘেরা এই পরিবেশ পিকনিক করার জন্য একেবারে পার্ফেক্ট।
গাদিয়ারা
কলকাতা থেকে প্রায় ৭৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নদীঘেরা আরেকটি পিকনিক স্পট হল গাদিয়ারা। একেবারে নিরিবিলি জায়গা এটি। এখানে অনেক সস্তায় পাবেন সমুদ্রের মাছ, চিংড়ি ও কাঁকড়া। তাই পিকনিক করতে আলাদা করে মাছ কিনে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সুযোগ আছে নৌবিহারেরও। নদীর হাওয়া গায়ে মেখে হৈ হৈ করে কেটে যাবে সারাদিন।
মাছরাঙা দ্বীপ
নাম শুনেই বুঝতে পারছেন হয়তো দ্বীপটির এমন নামের কারণ? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন, এখানে রয়েছে প্রচুর মাছরাঙা পাখি। ভাসা এবং ইছামতির মাঝে অবস্থিত এই সুন্দর দ্বীপটি। তবে শুধু মাছরাঙাই নয়, এখানে বহু পাখির বাস। এই দ্বীপের খুব কাছেই রয়েছে বাংলাদেশ। শীতের সময় নানা পরিযায়ী পাখির কলকলানিতে ভরে ওঠে চারিপাশ। তাই পিকনিকের জন্য বেছে নিতেই পারেন মাছরাঙাকে। টাকি অথবা হাসনাবাদ থেকে সহজে পৌঁছাতে পারবেন মাছরাঙা দ্বীপে।
ফ্রেজারগঞ্জ
সুন্দরবনের একেবারে পাশেই অবস্থিত ফ্রেজারগঞ্জ। সামুদ্রিক মাছের স্বাদ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পিকনিকের আনন্দ নিতে পারবেন।
বাবুর হাট
কংক্রিটের শহর থেকে দূরে সবুজ গ্রাম্য পরিবেশে সময় কাটাতে ঘুরে আসুন বাবুর হাট। উত্তর ২৪ পরগনায় অবস্থিত বাবুর হাটের দূরত্ব কলকাতা থেকে প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। সবুজ গাছপালা, পুকুর, ধান খেত… সব মিলিয়ে সুন্দর মনোরম পরিবেশ। তাই পিকনিকের প্ল্যান থাকলে সবান্ধবে চলে যান বাবুর হাট।
ব্যারাকপুর
কলকাতা থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর ২৪ পরগণার ব্যারাকপুর। এটি একটি ঐতিহাসিক শহর বলতে পারেন। কারণ সিপাই বিদ্রোহর সূচনা হয়েছিল এই শহরেই। এখানে ঘুরে দেখার পাশাপাশি পিকনিক করার আদর্শ জায়গা হল মঙ্গল পাণ্ডে ঘাটটি। ঘুরে দেখতে পারেন অন্নপূর্ণা মন্দিরও।
দেউলটি
সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছেই অবস্থিত দেউলটি খামারবাড়ি। সেখানেই রয়েছে দল বেঁধে পিকনিক করার উপযুক্ত ব্যবস্থা। নারকেল গাছে ঘেরা গ্রাম্য পরিবেশ উপভোগ করতে করতে কেটে যাবে সারাটা দিন।


